বয়স্ক শিক্ষার ক্ষেত্রে সাধারণভাবে বাংলাদেশের অগ্রগতি হলেও পুরুষের চেয়ে নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এদেশের ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৫৮ শতাংশ শহুরে ও ৪০ শতাংশ গ্রামীণ পুরুষ সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। বিপরীতে মাত্র ২৪ শতাংশ শহুরে ও ১২ শতাংশ গ্রামীণ নারীর সাক্ষরজ্ঞান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বয়স্ক শিক্ষা নিয়ে প্রকাশিত ইউনেস্কোর চতুর্থ বৈশ্বিক প্রতিবেদনে গ্রাম ও শহরে লিঙ্গভিত্তিক এই সাক্ষরতার হার তুলে ধরা হয়েছে। এতে ১৫৯টি দেশের চিত্র স্থান পেয়েছে।
তবে নতুন প্রজন্মের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে সাক্ষরতার বৈষম্য মোচনে সফল হয়েছে বাংলাদেশ। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ছেলেদের সাক্ষরতার হার শহরে ৮০ শতাংশ ও গ্রামে ৭৪ শতাংশ, বিপরীতে একই বয়সী মেয়েদের মধ্যে এই হার যথাক্রমে ৮৩ শতাংশ ও ৮১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষা প্রধান হলেও প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশে ১৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী পাঁচ শতাংশেরও কম মানুষ শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়। বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠী শিক্ষার অধিকার পায় না, যাদের মধ্যে প্রতিবন্ধী প্রাপ্তবয়স্ক, বৃদ্ধ, শরণার্থী ও অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যরা রয়েছেন। ইউনেস্কোর এক- পঞ্চমাংশ সদস্য দেশ বয়স্ক শিক্ষার জন্য শিক্ষা বাজেটের ৫ শতাংশেরও কম অর্থ ব্যয় করে। আরও ১৪ শতাংশ সদস্য দেশ ব্যয় করে ১ শতাংশেরও কম অর্থ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রামে যথাযথভাবে বয়স্ক শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে এশিয়ায় গণশিক্ষা কেন্দ্রগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে এসব শিক্ষাকেন্দ্রের (সিএলসি) সংখ্যা। তবে ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বয়স্ক শিক্ষায় অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউনেস্কো। প্রতিবেদনে বয়স্ক শিক্ষায় সবার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগসহ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়েছে।