বাগেরহাটে দেড় শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ

আলী আকবর টুটুল বাগেরহাট: |

বাগেরহাটে দেড় শতাধিক জরাজীর্র্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। কিছু কিছু বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকরা বিকল্প হিসেবে স্কুলের খেলার মাঠে বাঁশ দিয়ে টিনশেড তৈরি করে পাঠদান করছেন। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

বাগেরহাট সদর উপজেলার উত্তর পাতিলাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ৪ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পরেও নতুন ভবন নির্মানের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। কয়েক বছর ধরে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে শ্রেণি কক্ষে এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এখানে ক্লাস করতে চায় না। নতুন স্কুল ভবন নির্মাণ না হওয়ায় এখানে পড়তে আসা শিশুদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের অন্য স্কুলে নিয়ে ভর্তি করছেন বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। তাই সম্প্রতি শিক্ষকরা বিকল্প হিসেবে স্কুলের খেলার মাঠে বাঁশ দিয়ে টিনশেড তৈরি করে শিশুদের পাঠদান করছেন।

উত্তর পাতিলাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সংকর শিকদার দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, চার বছর আগে বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও পুনঃনির্মাণের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় শিক্ষকরা নিজেদের অর্থায়নে মাঠের পাশে একটি টিন শেড ঘর তরৈি করে সেখানে কোনোমতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। ভয়ে অনেক শিক্ষার্থীরা স্কুলে উপস্থিত হচ্ছে না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের খোজ খবর নিতে হয়। 

শহরতলীর মাঝিডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টিনশেডের তিন কক্ষের মধ্যে দুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে এখানে পড়তে আসা শিশুদের সিড়ি ঘরে বসে পাঠদান নিতে হচ্ছে।

অভিভাবক বেল্লাল বলেন, সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে বাড়িতে আতঙ্কে থাকতে হয়, কখন যেন মাথার উপর পলস্তোরা খুলে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবন বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান তিনি।

বাগেরহাটের ৯ উপজেলায়  এক হাজার ১৬২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪১টি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুকিপূর্ণ।
 
শিক্ষকরা বলছেন, জরাজীর্ণ ভবনে শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাঠদান করানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। পাঠদান চলা অবস্থায় অনেকবার পলেস্তারা খসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। অবিভাবকরা ভবনের অবস্থা দেখে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তাদের ছেলেমেয়ে এখানে পড়াতে চাননা। অন্যত্র চলে যায় অনেকে। তাই অস্থায়ী টিনশেড তৈরি করে এখন পাঠদান চলছে অনেক বিদ্যালয়ে। সামনে গরম আসছে, গরমে এসব শিশুদের ক্লাস করতে কষ্ট হবে। তাই আমরা এখানে নতুন ভবন তৈরি করার দাবি শিক্ষকদের।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হওয়ায় প্রতি বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে বিদ্যালয়গুলোতে। শিশু বান্ধব শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় তারা আশে পাশের স্কুলে চলে যাচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের বারবার অবহিত করা হয়েছে। বারবার তারা আশ^াস দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কবির উদ্দিন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, বাগেরহাটের ৯ টি উপজেলায়  ১ হাজার ১৬২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪১টি ঝুকিপূর্র্ণ ভবন রয়েছে। যেখানে মূল ভবনে ঝুকিপূর্ণ সেখানে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় বিকল্প ভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। তারপরও জেলার জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দিচ্ছে।   


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.013911962509155