বাদপড়া চার হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের দাবিতে বুধবার (৩ জুলাই) থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। গত ১৬ জুন থেকে ‘বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির’ ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করেছেন তাঁরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে বলে জানিয়েছেন ১৮তম দিনের মতো অবস্থানরত শিক্ষকরা। তবে, গত ১৮ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন করে আর প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের কোনো প্রস্তাব আপাতত বিবেচনা করার সুযোগ নেই।
বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. মামুনর রশিদ খোকন দৈনিক শিক্ষাকে জানান, চার হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের দাবিতে আজ বুধবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষকরা। গত ১৮ দিন ধরে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছি। এখন পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তাঁরা সুস্থ। তবে, আজকের আমরণ কর্মসূচিতে ঝিনাইদহের শিক্ষক তাছলিমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ৪ হাজার ১৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের ঘোষণা দেয়া না পর্যন্ত শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে।
অনশনরত শিক্ষকরা জানান, সরকারি হয়নি এমন চার হাজার ১৫৯টি স্কুল রয়েছে। মাঠ পর্যায় থেকে প্রকৃত তথ্য না দেয়ায় এসব স্কুল সরকারি হয়নি বলে দাবি করেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা জানান, সরকারিকরণের প্রক্রিয়ার সময় রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম স্থগিত করায় তারা বেতন-ভাতা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিফিন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শিক্ষকরা। তারপরেও এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন বলে দাবি করেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা জানান, তাদের অনেকেরই চাকরিতে প্রবেশের বয়স অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। অধিকাংশ শিক্ষকের অন্যত্র চাকরির আবেদনের সুযোগ নেই। তাই, বাদপড়া ৪ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করে শিক্ষকদের দুরাবস্থা থেকে মুক্তি দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো. কামাল হোসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাফর ইকবাল প্রমুখ।