লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদরাসার বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমপিও বাবদ সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম একইসাথে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন ভাতা তুলেছেন। সে মাদরাসার অধ্যক্ষ নূরল ইসলামের ছেলে। তদন্ত শেষে বাবা-ছেলের যোগসাজশে এমপিওর টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছেন মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা মুহম্মদ হোসাইন। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষকের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগটি তদন্ত করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা মুহম্মদ হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই মাদরাসার বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৯ জুন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে মাদরাসায় যোগদান করেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজেও প্রভাষক পদে যোগদান করেন। তিনি দুই প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত বেতন ভাতা তুলেছেন। পরে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১ আগষ্ট ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক পদ থকে পদত্যাগ করেন মঞ্জুরুল ইসলাম। কিন্তু পদত্যাগ করলেও ওই মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে গত ১৬ মাস এমপিও ভোগ করেছেন তিনি। এমপিও বাবদ প্রতিমাসে প্রায় ৩৭ হাজার টাকা করে নিয়মিত বেতন নিয়েছেন মঞ্জুরুল ইসলাম। তার বাবা মাওলানা নূরল ইসলাম ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ হওয়ায় বাবা-ছেলে দুইজনের যোগসাজে প্রতি মাসে প্রায় ৩৭ হাজার টাকা করে আত্মসাৎ করেছেন। চাকরি বিধি লঙ্ঘন করে সরকারী টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, অধ্যক্ষ নুর ইসলাম অসুস্থ হলে উপাধ্যক্ষ ফেরদৌস আহম্মেদও ওই অধ্যাপকের অবৈধভাবে টাকা উত্তোলনে সহযোগিতা করেন। এমন একটি অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে আসে। দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাতে বলে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে। সে প্রেক্ষিতে তদন্ত করে সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যাতা পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক পদ থকে পদত্যাগ করেছি। ওই দিনেই আবার পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহারের জন্য আবেদনও করেছি। আমার বাবা অসুস্থ। তাই, বিষয়টি একটু মানবিক বিবেচনায় দেখা উচিত।
অসুস্থ থাকায় ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ নূরল ইসলামের বক্তব্য পওয়া যায়নি।
মাদরাসার উপাধ্যক্ষ ফেরদৌস আহেম্মদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলামের বাবা নুর ইসলাম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তিনি আগে থেকেই মঞ্জুরুল ইসলামকে বেতন দিয়ে আসছেন। পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমিও বেতন দিয়েছি।
মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওয়াছেক খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
হাতীবান্ধা সরকারী আলিমুদ্দিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামসুল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মঞ্জুরুল ইসলাম দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-সম্মানী তুলছেন। বিষয়টি জানার পর গত ৬ মাস আগেই আমি তার বেতন বন্ধ করে দিয়েছি।