বাল্যবিয়ে দেয়ায় কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি |

বরগুনার তালতলীতে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দেয়ার কারণে নিজ বাড়ির রান্না ঘরের চালের সাথে রশি বেঁধে ফাঁস দিয়ে এক কলেজছাত্রী (১৫) আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) বিকালে এ উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের সকিনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আত্মহত্যাকারী সাবিনা আক্তার উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের সকিনা এলাকার মজনু হাওলাদারের মেয়ে ও তালতলী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত জুলাইয়ের শেষের দিকে উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের ঠংপাড়া এলাকার জালাল মৃধার ছেলে মিজানুরের সাথে পারিবারিকভাবে সাবিনার বিয়ে দেন তার বাবা ও চাচা শহিদ। বিয়ের কথা শুনে ওই কলেজছাত্রী স্বামীর বাড়িতে যাবে না বলে তার পরিবারসহ বাবা-মাকে জানান। তারপরও সাবিনাকে জোরপূর্বক পাঠানো হয় স্বামীর বাড়িতে। ৩ দিন পর সেখান থেকে ফিরে আর স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ার কথা বলায় সাবিনার উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সাবিনা আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা তাদের।

এদিকে নিহত সাবিনার বোন সাইয়েদা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার বোন পড়ালেখা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমার চাচা শহিদ ও বাবা জোর করে বিয়ে দেয়। এই বিয়েতে আমাদের পরিবারের বাবা ছাড়া আর কেউ রাজি ছিল না। আমাদের মতামত ছাড়াই বিয়ে দেন তারা। কিন্তু পরে আমার বোন স্বামীর বাড়িতে যেতে চায়নি। তাকে স্বামীর বাড়ি যেতে বাধ্য করতে মানসিক চাপ দেয়াতে সে আত্মহত্যা করে। আমি বিয়ের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে আমাকেও আমার চাচা মারধর করেন। আমার বোনের আত্মহত্যার পেছনে আমার বাবা ও চাচা জড়িত। আমি আমার বোনের হত্যার বিচার চাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক লোক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সাবিনা একজন মেধাবী মেয়ে। সে তালতলী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার অনিচ্ছার বাইরে তাকে বাল্যবিয়ে দেয়া হয়েছে। এ আত্মহত্যার পেছনে সাবিনার চাচা ও বাবা জড়িত। তারা জোরপূর্বক বিয়ে দেয়াতে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানান।

এ বিষয়ে সাবিনার চাচা শহিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিয়ে দেয়া হয়েছে মেয়ের মতামতের বিরুদ্ধে। কিন্তু মেয়ে তার স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ার কথা বললে কিছুটা রাগারাগি করা হয়েছে। পরে তালাকের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তার আগেই সাবিনা আত্মহত্যা করেছে।

সাবিনার বোনকে মারধরের বিষয় অস্বীকার করে তিনি বলেন, শুধু রাগারাগি করা হয়েছে মারধর করা হয়নি। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্রশ্নই আসে না।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সাবিনা আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা নিয়ে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047991275787354