বাসচাপায় গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের নবম শ্রেণির দুই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় রোববার (১৪ অক্টোবর) দায়ী চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বিদ্যালয়ের সামনে তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির হস্তক্ষেপে তারা নিবৃত্ত হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধনস্থলে আগে থেকেই রাজবাড়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিব খানের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়। এ ছাড়া সেখানে হাজির হন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবায়েত হায়াত শিপলু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মণ্ডলসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে নুরুল ইসলাম মণ্ডল শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান। কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণার পর পাশের কেকেএস সরকারি শিশু বিদ্যালয়ের সামনে থেকে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিব খান জানান, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মহাসড়কের দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের সামনে সোমবারের (১৫ অক্টোবর) মধ্যেই দুটি স্পিডব্রেকার ও অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া যে বাস দুই ছাত্রীকে চাপা দিয়েছে, সেটির চালককেও ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের সামনে শনিবার দুপুরে বেপরোয়া বাসের চাপায় নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী চাঁদনী আক্তার ও জাকিয়া সুলতানা কেয়া নিহত হয়।
এদিকে বাসচাপায় দুই ছাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় গতকাল রাজবাড়ী জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় শোক প্রকাশ ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে। এ সময় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী ওই বিদ্যালয়ের সামনে দুটি স্পিডব্রেকার নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ওই ঘটনায় গোল্ডেন লাইন পরিবহনকে দায়ী করলেও আসলে দুই ছাত্রীকে চাপা দেয় ঈগল পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৬৫১৬) একটি বাস। বাসটি ও তার চালক রবিউল ইসলাম শিকদারকে ইতিমধ্যে যশোর থেকে আটক করেছে পুলিশ। রবিউল যশোর জেলার কোতোয়ালি থানার নুরুউদ্দিন শিকদারের ছেলে।