বিএম কলেজে অনার্স ভর্তিতে অতিরিক্ত কোটি টাকা আদায়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে (২০১৯-২০) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছেন সাইমুন ইসলাম ইমন। ভর্তির জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি শিওর ক্যাশের মাধ্যমে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেছিলেন। তবে ভর্তির কাগজপত্র ও শিওর ক্যাশের রসিদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে গিয়ে হতবাক তিনি। কারণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা পরিশোধ করার পরে বিভাগ তাঁর কাছ থেকে অতিরিক্ত আরও দুই হাজার ২০০ টাকা রেখে দেয়। এই টাকা কোন খাতের জন্য রাখা হয়েছে তা কিছুই বলা হয়নি। তবে তাঁকে সাদা রঙের একটি রসিদে এক হাজার ৬০০ টাকা, নীল রঙের একটি রসিদে ৪৮০ টাকা আর গোলাপি রঙের রসিদে ৫০ টাকা লিখে দেওয়া হয়। বাকি ৭০ টাকা বিনা রসিদেই নিয়ে নেয়। রসিদগুলোতে কেবল একটি রোল নম্বর থাকে। তাঁর নাম কিংবা কোন খাতে টাকাটা নেওয়া হয়েছে তার কিছুই উল্লেখ নেই। বিষয়টি জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থীকে শিক্ষকদের ভর্ৎসনার শিকার হতে হয়। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আজিম হোসেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কেবল সাইমুন ইসলামই নন, কলেজের ২২টি বিভাগে ভর্তি হওয়া পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকেই কলেজ প্রশাসন এভাবে বাড়তি টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি বিএম কলেজের ২২টি বিভাগে মোট পাঁচ হাজার ২৭৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ভর্তীচ্ছুদের শিওর ক্যাশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন হাজার ২০৫ টাকা করে দিতে হবে। তবে বিজ্ঞান বিভাগের রসায়ন ও গণিতে তিন হাজার ৩০৫ টাকা দিতে হবে। ওই টাকা জমার রসিদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে সেমিনার ফি ৪০০ টাকা ও শিক্ষা সফর ফি ৫০ টাকা জমা দিয়ে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন।

তবে এ ক্ষেত্রে সরকারি বিএম কলেজের চিত্রটা অস্বাভাবিক। কলেজের প্রতিটি বিভাগই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা করে অতিরিক্ত নিচ্ছে। অনেক বিভাগ এর চেয়েও দু-তিন শ টাকা বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে রসিদও দিচ্ছে না। কলেজের বেশ কয়েকটি বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার কলেজ প্রশাসন তিনটি রসিদ ছাপিয়ে তাতে রোল নম্বর লিখে তাঁদের কাছে পাঠিয়েছে। এর মাধ্যমে দুই হাজার ২০০ টাকা করে অতিরিক্ত আদায় করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।

বিএম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক গাউস মোসাদ্দেক বলেন, ‘কলেজ প্রশাসন থেকে আমাদের তিনটি রসিদ দিয়েছে। সেখানে সাদা রসিদে এক হাজার ৬০০ টাকা অর্থাত্ ৪০০ টাকা করে চার বছরের সেমিনার ফি, গোলাপি রসিদে ৫০ টাকা শিক্ষা সফরের জন্য আর নীল রসিদে ইনকোর্স পরীক্ষার ফি ৪৮০ টাকা নিতে বলা হয়েছে। তবে বাড়তি যে টাকা রসিদবিহীন নেওয়া হচ্ছে তা সেমিনার মেইনটেনেন্স ফি।’ তবে প্রতিবছর তাঁরা এক বছরের সেমিনার ফি ৪০০ টাকা আর শিক্ষা সফর ৫০ টাকা নিতেন বলে জানিয়েছেন। এবার কলেজ প্রশাসন তাদের চার বছরের সেমিনার ও চার বছরের ইনকোর্স ফি একবারে নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিএম কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক শফিকুর রহমান বলেন, ‘অনেক কলেজ চার বছরের সেমিনার ফি ও ইনকোর্স পরীক্ষার ফি নিচ্ছে। আমরাও তাই নিচ্ছি। তবে মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা দিলে আমরা শিক্ষার্থীদের তা ফেরত দিয়ে দিব।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059189796447754