বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে আন্দোলনকারী শিক্ষক-চিকিৎসকদের ওপর পুলিশি হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।
এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সাইদ আহমদ সাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদেই কর্তব্যরত শিক্ষক-চিকিৎসকদের ওপর বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। অনতিবিলম্বে চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
এর আগে ঈদের ছুটির পর রোববার (৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা সোমবার (১০ জুন) থেকে অনুষ্ঠিতব্য মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে মিছিল বের করে ও নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় গ্রহণের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেয়। এ সময় তারা উপাচার্যের কার্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। এর ফলে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক আহত হন।
এরপর চিকিৎসক নিয়োগে দুর্নীতির প্রমাণ তুলে ধরলেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হওয়া নানান অনিয়ম দুর্নীতির চিত্র প্রমাণসহ তুলে ধরে তার ফেসবুকে একটি পোস্ট প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ বিএসএমএমইউতে ২০০ ডাক্তার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশিত হয়। ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার ও ২০ জন ডেন্টাল চিকিৎসক পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন। লিখিত পরীক্ষায় ১ পদের জন্য ৪ জন পাস করেন। এ হিসাবে ৭১৯ জন মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টালের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। চূড়ান্ত নিয়োগের লক্ষ্যে তাদের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ‘সুযোগবঞ্চিত’ চিকিৎসকরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে ‘ছেলের জন্য সাজানো নিয়োগ, লজ্জা, ভিসি লজ্জা, ভিসির পদত্যাগ চাই!
অর্থের বিনিময়ে এই নিয়োগ মানি না, মানবো না, প্রশ্নফাঁসের এ নিয়োগ কাদের জন্য, আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে’- ইত্যাদি স্লোগান লেখা পোস্টার সেঁটে দেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের দাবি সঠিক নিয়ম মেনে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি।
এর আগে ফল প্রকাশের পর তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। মেধাবীরাই চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করা হবে না।