বিজ্ঞপ্তি নয়, সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন চাই : আবরারের বাবা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি |

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হলের রুমে ব্যবহার করা কোনো কিছুই ফেরত পাচ্ছে না তার পরিবার। এমনকি হত্যাকাণ্ডের রাতেই রুম থেকে তার ল্যাপটপ গায়েব হয়ে যায়। শেষ স্মৃতি ধরে রাখতে আবরারের ব্যবহার করা সবকিছু ফেরত চায় পরিবার। শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ এসব কথা বলেন।


সিসিটিভির ফুটেজে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অবস্থান পরিষ্কার। দু’জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। তারপরও এজাহারভুক্ত ১৯ আসামিকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আবরারের বাবা-মা। হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজনীতি না করারও আহ্বান জানান তারা।

আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ বলেন, আবরারের লাশ আনতে আমি ৭ অক্টোবর ঢাকা যাই। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বার রুমে থাকত সে। রুমে ঢুকতেই দেখতে পাই বিছানায় তার জামা-কাপড় এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। পড়ার টেবিলে বইখাতা খোলা। আমি আবরারের জিনিসপত্র ধরতে গেলে পুলিশ নিষেধ করে। বলে, আলামত নষ্ট হয়ে যাবে। পরে জানতে পারি আবরারের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল হল সুপারের কাছে রয়েছে। তার কাছে মোবাইল দুটি ফেরত চাইলে তিনি জানান, মামলায় মোবাইল কাজে লাগতে পারে। এছাড়া তার ব্যবহৃত ল্যাপটপটির কোনো হদিস মিলছে না। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা কেউই আবরারের ল্যাপটপের কোনো সন্ধান জানেন না বলে জানিয়েছেন। আবরারের মা রোকেয়া বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রীও একজন মা। তার হৃদয়ে যদি তিল পরিমাণ সন্তানের জন্য ভালোবাসা থেকে থাকে, তার কাছে আমার আকুল আবেদন খুনিরা যেন আর কোনো দিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখতে না পারে।

আবরারের ছোট ভাই ফাইয়াজ বলেন, আমার পরিবার থেকে আমাকে কিছু বিধিনিষেধ করেছে। আমি যেন এমন কোনো কথা না বলি যাতে ভাই হত্যার বিচার পাওয়ায় বাধা হয়। তাই এ মুহূর্তে কিছু বলতে চাচ্ছি না।

এদিকে আবরার হত্যার ঘটনায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিক্রিয়ায় আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ  বলেন, শুধু কাগজে-কলমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ নয়, সব সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। বরকতউল্লাহ বলেন, এর আগেও বুয়েট কর্তৃপক্ষ র‌্যাগিং বন্ধে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। সে সময় সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হলে আজ আমার ছেলেকে অকালে ঝরে যেতে হতো না। শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে যদি সব দফা মেনে নেয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেন বুয়েট কর্তৃপক্ষ, তাহলে আমার ছেলের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। অতীতের মতো আর কোনো কাগজে-কলমে সিদ্ধান্ত  নেয়া দেখতে চাই না। আমরা সব সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। তিনি বলেন, এ ধরনের অধিকাংশ মামলা দীর্ঘ সময় নিয়ে বিচারাধীন থাকে। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় মামলার ১০ আসামির ৬ আসামির সাজা হয়, বাকিরা বেকসুর খালাস। আবরার হত্যা মামলার এমন পরিণতি দেখতে চাই না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.015931844711304