শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, সরকার বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস ও স্টাডি সেন্টার পরিচালনার কোনো অনুমোদন দেয়নি। এ থেকেই স্পষ্ট যে, এ সব যা চলছে সব অবৈধ এবং এদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী আরো জানান, যেহেতু এদের অনুমোদন নেই, এ কারণে অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাওয়া সনদের কোনো বৈধতা দেওয়া হবে না। আজ ২২ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
খবরে বলা হয়: ‘বিএসি ইন্টারন্যাশনাল স্টাডি সেন্টারসহ সব স্টাডি সেন্টার ও শাখা ক্যাম্পাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাডি সেন্টার এবং শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনায় সরকারের অনুমোদন না থাকায় এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে দেশে অবৈধভাবে পরিচালিত এ সব প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়াসহ নিয়ম না মানার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবরে আরো বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) জানিয়েছে, দেশে কোনো বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টারের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বিএসি ইন্টারন্যাশনাল স্টাডি সেন্টারের নাম উল্লেখ করে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এ সব অননুমোদিত ও অবৈধ, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী এ প্রতিবেদককে জানান, যেহেতু বিএসি স্টাডি সেন্টার অনুমোদন পায়নি এ কারণে এদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ‘ইত্তেফাক’কে জানিয়েছেন, সরকার বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস ও স্টাডি সেন্টার পরিচালনার কোনো অনুমোদন দেয়নি। এ থেকেই স্পষ্ট যে, এ সব যা চলছে সব অবৈধ এবং এদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, যেহেতু এদের অনুমোদন নেই। এ কারণে অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাওয়া সনদের কোনো বৈধতা দেওয়া হবে না। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাডি সেন্টারগুলো শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করছে। বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো লাগিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে; যা প্রতারণার শামিল।
রফিকুল নামে এক অভিভাবক এই প্রতিবেদককে বলেন, এরা প্রকাশ্যে প্রতারণা করছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান ‘ইত্তেফাক’কে জানিয়েছেন, অনুমোদন ছাড়া যেসব শাখা ক্যাম্পাস এবং স্টাডি সেন্টার চলছে সেগুলো অবৈধ।
প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
গত ৬ ডিসেম্বর ইত্তেফাকে’ ‘চলছে অনুমোদনহীন বিদেশি ভার্সিটির স্টাডি সেন্টার’ শিরোনামে সংবাদটির প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএসি ইন্টারন্যাশনাল স্টাডি সেন্টার। প্রতিবাদে বলেছে, বিএসি ইন্টারন্যাশনাল স্টাডি সেন্টারকে অনুমোদনহীন বলা গ্রহণযোগ্য নয়। ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধি দল যুক্তরাজ্যে ডার্বি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে। তারা ইউজিসির ও মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তাদের নামও উল্লেখ করে। প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, বিএসি ইন্টারন্যাশনাল স্টাডি সেন্টারের আবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন আছে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
প্রতিবেদনে শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসির চেয়ারম্যানের বক্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসির চেয়ারম্যান এই প্রতিনিধিকে বলেছেন, দেশে কোনো বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তাই যদি এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে থাকে তা অবৈধ।
এ ছাড়া ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধি দলের যুক্তরাজ্যে ডার্বি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের সাথে বিএসি ইন্টারন্যাশনাল স্টাডি সেন্টারের কোনো যোগসূত্র নেই। ওই প্রতিনিধি দল ব্রিটিশ কাউন্সিলের আমন্ত্রণে লন্ডনের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যায়। প্রতিনিধি দলে থাকা ইউজিসির সচিব জানান, এই ভ্রমণের সাথে বিএসি স্টাডি সেন্টারের অনুমোদন বা ভালো-মন্দ মেলানো যাবে না। এটি কেউ করে থাকলে তা অপরাধের শামিল। সনদের বৈধতার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, অবৈধ ও অননুমোদিত স্টাডি সেন্টারের সনদের বৈধতা দেওয়া হবে না।
খবরের সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক।