বাংলাদেশে বিভিন্ন সেবার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র এখন বাধ্যতামূলক। প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে বিদেশে বসেই তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারেন এবং সেখানে বসেই জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে পারেন সেজন্যে নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র উইং-এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বিবিসি জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ে মালয়েশিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আজ থেকে এই পোর্টালের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন, তবে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশেও এই সেবা চালু করা হবে।
মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কর্মর্সূচি উদ্বোধন করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদন করার জন্য পাসপোর্টের ফটোকপি লাগবে। এছাড়া যারা দ্বৈত নাগরিক তাদের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
"এই পোর্টালে লগ-ইন করে যে কোন বাংলাদেশি নাগরিক ফরমটি ওপেন করে ফিল-আপ করতে পারবে। এই আবেদনের সাথে কী ধরণের কাগজপত্র সংযুক্তি দিতে হবে সেটা আমরা ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিচ্ছি," বলছিলেন মি: ইসলাম।
অনলাইনে আবেদন করলে সেটি এনআইডি উইং-এ আসবে।
মি: ইসলাম জানান, এরপর সে আবেদনটি সংশ্লিষ্ট উপজেলা এবং থানায় পাঠানো হবে। তারপর সে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে।
"যাদের তথ্য সঠিক পাওয়া যাবে এবং যখন আমরা প্রমাণ পাবো যে তার বাংলাদেশী নাগরিক হবার বৈধতা রয়েছে তখন আমাদের টিম যাবে সে নাগরিকের বায়োমেট্রিক ইনফরমেশন গ্রহণ করার জন্য। "
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি কাজের উদ্বোধন করছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ
বায়োমেট্রিক তথ্যের মধ্যে রয়েছে ১০ আঙুলের ছাপ এবং আইরিস (চোখের মনির ছাপ) নেয়া হবে। এ তথ্যগুলো সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের লোকাল সার্ভারে রাখা হবে। এরপর সেটি মূল সার্ভারে পাঠিয়ে দেয়া হবে যাচাই করার জন্য।
অনলাইনে আবেদন করার পর জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে কতদিন সময় লাগবে?
মি. ইসলাম বলছেন, আবেদনের পর ৪৫ দিনের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র দেবার চেষ্টা করা হবে।
তিনি জানান, মালয়েশিয়া এবং সৌদি আরবে বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি বসবাস করছে। এর পাশাপাশি ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, কুয়েত,কাতার এবং বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশে দল পাঠানো হবে।
এই টিমে সদস্য সংখ্যা কতজন হবে সেটি নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট দেশে কত সংখ্যক বাংলাদেশি অবস্থান করবে তার উপর।
মি. ইসলাম আশা করেন, চলতি মাসের মধ্যেই সিঙ্গাপুর এবং দুবাইতে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের কাজ শুরু হবে।
এছাড়া ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি নাগাদ ব্রিটেন, আমেরিকা এবং কানাডায় এ কাজ শুরু করা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটে গিয়ে ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন পারবেন।
ফরম পূরণের ক্ষেত্রে আটটি তথ্য দিতে হবে। সেগুলো হলো - পিতা-মাতার নাম ইংরেজি ও বাংলায়, বসবাসরত দেশের নাম, জিপকোড, বাসা ও হোল্ডিং নম্বর, প্রদেশ, ফোন নম্বর, শনাক্তকারী ব্যক্তির নাম ও পাসপোর্ট নম্বর।