গত বছরের বর্ষায় যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া চরের ২ নম্বর মধ্যনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। শিক্ষার কথা চিন্তা করে আলোকদিয়া আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাজারের পেছনে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়।
নদীতে বিলীন হওয়ার পর সরকারি অনুদান না আসায় নতুন করে স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি একচালা টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। তবে ঘরের চারপাশে বেড়া না থাকায় এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে পড়ালেখা করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
১৯৩০ সালে শিবালয় উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলে আলোকদিয়া এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে যমুনা নদীর ভাঙনের ফলে এর আগে বেশ কয়েকবার বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়।
শিবালয় উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে আলোকদিয়া চরের আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাজারের পেছনে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি একচালা টিনের ঘরে গাদাগাদি করে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। একচালা টিনের ঘরের চারপাশে কোনো বেড়া নেই। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাকি শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে। সাড়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী ও চারজন শিক্ষক রয়েছেন বিদ্যালয়টিতে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, খোলা আকাশের নিচে ও টিনের ঘরের বেড়া না থাকায় তাদের পড়ালেখায় সমস্যা হচ্ছে। শীতের সময় ঠাণ্ডা বাতাস আর গরমের সময় প্রচুর ধুলাবালু ওড়ে। এতে করে মাঝেমধ্যেই তাদের বিভিন্ন ধরনের অসুখে পড়তে হচ্ছে। গাদাগাদি করে ও অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাশাপাশি বসে ক্লাস করতে সমস্যা হয় এবং ঠিকমতো মনোযোগ হয় না।
অভিভাবকরা জানান, এই চরাঞ্চলের জীবনমান ও অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় পড়াশোনার পরিবেশও নেই। শিক্ষার্থী বেশি ও শিক্ষক কমসহ নানা সমস্যা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ছেলেমেয়েরা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে। আশপাশে কোনো বিদ্যালয় না থাকায় বাধ্য হয়ে এখানেই পড়াতে হচ্ছে। এখন সরকার যদি নতুন ভবন নির্মাণ না করে, তাহলে তাদের সন্তানদের পড়াশোনার পরিবেশ থাকবে না। অবিলম্বে এখানে বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণের দাবি জানান তারা।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিষ্ণুদেব বিশ্বাস জানান, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় কিছু শিক্ষার্থী টিনের কক্ষে আর বাকিরা খোলা আকাশের নিচে কোনোরকমে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।
শিবালয় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাবেরা সুলতানা বলেন, ভূমি জটিলতার কারণে ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। তবে শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে এবং ভূমি জটিলতা সমাধান হলে দ্রুত একটি ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হবে।