৬ ডিসেম্বর টুর্নামেন্ট শুরুর ঘোষণা দেয়া আছে। সেদিক থেকে বিপিএল আয়োজনের কাজকর্মগুলো জোরেশোরে হওয়ার কথা। দৃশ্যত সেভাবে কিছুই চোখে পড়ছে না। এ ছাড়া ফ্র্যাঞ্চাইজি না থাকায় টুর্নামেন্টের আয়োজনের সব কিছুই তো করতে হবে বিসিবিকেই। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০১৯ বিপিএল করার ঘোষণা দেওয়ায় টুর্নামেন্টের গুরুত্বও বেড়ে গেছে অনেক। তাই আগের চেয়েও জাঁকালো আসর হতে হবে এবার। বিপিএলের এই বিশেষ আয়োজন বাস্তবায়ন করতে কতটা প্রস্তুত বিসিবি। বোর্ডের পরিচালক এবং বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের কাছে এই প্রশ্ন করা হলে বেশিরভাগই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য আকরাম খান শনিবার শুধু জানালেন, যেটুকু সময় হাতে আছে তাতে করে বিপিএলের সফল আয়োজন করা চ্যালেঞ্জিং।
তবে বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বিপিএল টুর্নামেন্টটি নির্ধারিত সময়ে হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। টুর্নামেন্ট আয়োজনের বেসিক কাজগুলোর বেশিরভাগই হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
বিসিবি ও বিপিএলের অফিসিয়ালদের কাছ থেকে জানা গেছে, দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের একটা তালিকা করে ফেলেছেন তারা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু শ্রীলংকা থেকে ফোনে জানান, প্লেয়ার ড্রাফটের ক্যাটাগরি অনুযায়ী স্থানীয় খেলোয়াড় তালিকা দেয়া হয়েছে। বিসিবির বিপিএল শাখা ৩০০ জন বিদেশি ক্রিকেটারের একটি তালিকা প্রস্তুত করে ফেলেছে। খেলোয়াড়দের এই তালিকা দু-একদিনের মধ্যেই সিইও নিজামউদ্দিনকে দেয়া হবে। বিপিএলের একজন অফিসিয়াল জানান, এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে খেলোয়াড় ড্রাফট হতে পারে।
বিসিবির একাধিক পরিচালক নিশ্চিত করেছেন, বঙ্গবন্ধু বিপিএল ২০১৯ আয়োজনের দায়িত্ব নিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। যে কারণে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যরা এ ব্যাপারে মিডিয়ায় কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না। তবে বিসিবি সিইওর নেতৃত্বে স্টাফরা ভেতরে ভেতরে কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। আজ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পরিচালকদের সঙ্গে বোর্ডের সার্বিক ইস্যুতে বৈঠক করতে পারেন। সেটা হলে বিপিএলসহ সমকালীন ইস্যুতে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন বোর্ড সভাপতি।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সাতটি দলের জন্য স্পন্সর চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল বিসিবি। বেঁধে দেয়া সময়ে ছয়টি প্রতিষ্ঠান স্পন্সর হতে আগ্রহ দেখিয়েছে। বাকি স্পন্সরও হয়ে যেতে পারে। স্পন্সর পাওয়া গেলেও এবারের স্পেশাল বিপিএলে বৈশ্বিক তারকা ক্রিকেটারদের সেভাবে নাও দেখা যেতে পারে। কারণ বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের জন্য এক লাখ ডলার সম্মানী বেঁধে দেবে। এ কারণে খেলোয়াড়দের এজেন্টরা তারকা ক্রিকেটারদের প্লেয়ার ড্রাফটে নাম দেয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে। দেশি ও বিদেশি খেলোয়াড় এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, এক লাখ ডলারে চুক্তি হলে ৩০ শতাংশ ট্যাক্স কেটে ৭০ হাজার ডলার ক্রিকেটারকে দেবে বিসিবি। খেলোয়াড় এজেন্ট এখান থেকে পাবে ১০ হাজার ডলার। এসব দেয়া-নেয়ার পর ক্রিকেটারের পকেটে যাবে ৬০ হাজার ডলার। এই টাকার ওপর নিজ দেশে ট্যাক্স দিতে হবে তাকে। এ কারণে ২০১৯ বিপিএলে তারকা ক্রিকেটারদের নাও দেখা যেতে পারে।
বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের ভিত্তিমূল্য আগে এক লাখ ডলার থাকলেও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তালিকার বাইরে থেকে তিনজনকে নিতে পারত। বিসিবি সভাপতি পাপন এই সুযোগ স্পন্সরদের দিতে চান। বাস্তবতা হলো, ক্রিকেটের সঙ্গে আগে থেকে সম্পৃক্ততা না থাকলে স্পন্সরদের পক্ষে চার-পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে বিদেশি তারকা ক্রিকেটার আনার ঝুঁকি কে নেবে!