রাত পোহালেই জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষা। এমন সময় শিশু সন্তান নিয়ে ছুটতে হচ্ছে হাসপাতালে। শরীয়তপুর জেলা শহরের এসডিএস একাডেমির ৩২ শিক্ষার্থী, ২৮ অভিভাবক ও শিক্ষক হোটেল থেকে আনা বিরিয়ানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের চিকিত্সা চলছে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে।
এসডিএস একাডেমি সূত্র জানায়, তাদের ৩২ জন শিক্ষার্থী এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ উপলক্ষ্যে ক্লাশ পার্টির আয়োজন করে। ঐ পার্টিতে দুপুরের খাবার হিসেবে বিরিয়ানি আনা হয় শহরের রাজগঞ্জ ব্রিজ এলাকার মদিনা বিরিয়ানি নামে এক দোকান থেকে।
কিন্তু বিরিয়ানি খাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত থেকে ছাত্ররা ছাড়াও তাদের অভিভাবক, স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা অসুস্থ হতে থাকে। তাদের পাতলা পায়খানা, জ্বর, বমি ও শরীরব্যথা হতে থাকে। ফলে জরুরিভাবে হাসপাতালে নিতে হয়।
জেলা পরিষদের কর্মকর্তা রনজিত্ সাহার ছেলে এসডিএস একাডেমির শিক্ষার্থী। সে বৃহস্পতিবার ক্লাশ পার্টির এক প্যাকেট বিরিয়ানি খায়। শুক্রবার দুপুরের পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষার পড়াশোনায় বিঘ্ন হবে ভেবে তাকে বাড়িতে বসেই প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়।
কিন্তু পরিস্থতি অবনতি হলে তাকে শনিবার শহরের ডক্টর পয়েন্টে আনা হয়। সেখানে তার চিকিত্সা চলছে। অপরদিকে, একাডেমির হিসাবরক্ষক বিউটি আক্তার, তার মা হামিদা বেগম, ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র বাসিত হোসেন সবাই বিরিয়ানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিউটি বেগম বলেন, পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা, বমি ও জ্বর হচ্ছে। জানি না বিরিয়ানির মধ্যে কি ছিল।
এদিকে এই ঘটনা প্রচার হলে মদিনা বিরিয়ানির মালিক মুকিম হাওলাদার গতকাল শনিবার তার দোকান বন্ধ রাখেন। তবে তাকে পৌর বাস টার্মিনালে খুঁজে পাওয়া যায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এক সাথে ১০০ জনের বিরিয়ানি রান্না করেছি।
এসডিএস নিয়েছে ৬৫ জনের খাবার। অন্য কারো সমস্যা হয়েছে বলে শুনিনি। এসডিএসের বিরিয়ানিতে কি হয়েছে আমি বলতে পারব না। ভয়ে দোকান বন্ধ করে রেখেছেন বলে তিনি জানান।
এসডিএস একাডেমির অধ্যক্ষ সিরাজুর হক বলেন, বিরিয়ানি খেয়ে শিশুদের সঙ্গে আমিও অসুস্থ হয়ে পড়েছি। ঐ খাবারে অবশ্যই বিষাক্ত কিছু ছিল। বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি।
জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আর ঐ হোটেলের খাবারও পরীক্ষা করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।