কুড়িগ্রামে বিলুপ্ত ছিটমহলের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়া থেকে কয়েকশ শিক্ষক-কর্মচারী মিছিল নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা শহর প্রদক্ষিণ করেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশ শেষে দাবি আদায়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
শিক্ষকরা সমাবেশে বলেন, দীর্ঘ ৬৮ বছর পর ছিটমহল বিনিময়ের পর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিলুপ্ত ছিটমহলের ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষক-কর্মচারী বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাই ছিটমহলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সব শর্ত শিথিল করে ওইসব প্রতিষ্ঠান এমপিভুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিলুপ্ত ছিটমহলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবন যাপন করতে হচ্ছে এসব শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার বিভিন্ন হাইস্কুল ও মাদরাসার শিক্ষকদের দ্রুত এমপিওভুক্তির আওতায় আনতে সরকার কাজ করছে। যা যা উন্নয়ন দেশের সব জেলায় হয়েছে বা হচ্ছে তার সবই করা হচ্ছে বিলুপ্ত এ ছিটমহলে। সম্প্রতি এখানকার উন্নয়নে বেশকিছু স্থানীয়কে মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এখানে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে সেগুলোর দ্রুততম সময়ে শিক্ষকদের বেতনভুক্ত করতে কাজ করছে সরকার। এছাড়াও আরো উন্নয়ন করতে যা লাগবে তা করতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দাসিয়ারছড়া সমন্বয়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুর ইসলাম, দাসিয়ারছড়া বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান, কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাইসহ স্থানীয় শিক্ষক কর্মচারীরা।
উল্লেখ্য, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ছিটহল বিনিময়ের মাধ্যমে ৬৮ বছরের বন্দি জীবনের অবসান ঘটে ১৬২টি ছিটমহলের মানুষের। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় ১২টি, লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগ্রাম জেলায় ৩৬টি এবং নীলফামারী জেলায় রয়েছে ৪টি বিলুপ্ত ছিটমহল আছে।