অফিসের জরুরি প্রয়োজনে মিটিংয়ে রয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ে উপস্থিত নেই সহকারী অন্য শিক্ষকরাও। বাধ্য হয়েই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন কার্যকলাপে নাখোশ স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
মঙ্গলবার (০৫ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩০ নম্বর কাটিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়।
রমজান মাসে সরকারিভাবে বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও বিশেষ ব্যবস্থায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হচ্ছে ওই বিদ্যালয়ে। কোচিং করার বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মো. আলী হোসেন জানান, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮৭ জন। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ জন। বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন চারজন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ দুই শিক্ষক রয়েছেন মিটিংয়ে। অপর দুই শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেননি। যে কারণে তিনি নিজেই প্রধান শিক্ষকের ক্লাস নিচ্ছেন।
কাটিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূর হোসেন জানান, উপজেলা শিক্ষা বিষয়ক মাসিক মিটিংয়ে রমজান মাসে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তাই বাধ্য হয়েই ওই ক্লাস নিতে হচ্ছে। মিটিংয়ে থাকার কারণে বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী তার পরিবর্তে ক্লাস নিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, রমজান মাসে বিদ্যালয়ে কোচিং করানো বাধ্যতামূলক করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এজন্য তিনি তার সন্তানকে নিয়ে বিদ্যালয়ে এসেছেন। কিন্তু নৈশপ্রহরী দিয়ে নামে মাত্র ক্লাস নিলে ওই ক্লাসে শিক্ষার্থীদের কতটুকু উন্নতি হবে বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত তিনি।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সায়েম মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, রমজান মাসে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেকটা ক্ষতি হয়। এজন্য শিক্ষকদের এ মাসে বাড়তি ক্লাস নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী
দিয়ে ক্লাস নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।