রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষার ফরম পূরণের নামে প্রতারণা করে আবেদনকারীদের কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এক কম্পিউটার দোকানি। তিনি সাধারণ পরীক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধী দেখিয়ে প্রতিটি আবেদনে ৬০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মূল অভিযুক্তসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। ওই দোকানির নাম মোস্তফা আহমেদ মামুন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের স্পন্দন কম্পিউটার দোকানের মালিক।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি তার দোকানে কম্পিউটার কম্পোজ ও ফরম পূরণের কাজ করে আসছেন। আটক অপর দু'জন হলেন মামুনের পাশের দোকান ভাই ভাই কম্পিউটারের মালিক আরিফ হোসেন ও রফিকুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বিসিএস ফরমের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের ৭০৫ টাকা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ১০৫ টাকা দিতে হয়। মামুনের দোকানে প্রতিদিনই অনেক আবেদনকারী আসেন বিসিএস পরীক্ষার আবেদন করতে। তবে ফরম পূরণে সময় লাগে জানিয়ে তিনি আবেদনকারীদের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখে রেখে তাদের পরদিন এসে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে বলতেন। মামুন ফরম পূরণের আগেই একটি নকল প্রবেশপত্র বের করে আবেদনকারীদের দিয়ে দিতেন। পরে মামুন আবেদনকারীদের প্রতিবন্ধী দেখিয়ে ওয়েবসাইটে তাদের ফরম পূরণ করে দেন। এভাবে গত ১০-১৫ দিন ধরে তিনি প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর বিসিএসের ফরম পূরণ করে প্রায় দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মানিক রায়হান নামে এক আবেদনকারী জানান, গত বুধবার রাতে তার প্রবেশপত্রের সঙ্গে মোবাইলে আসা ইউজার আইডির কোডটি মিল না পেয়ে বিষয়টি তার এক বন্ধুকে জানান। তারা তখন খোঁজ নিয়ে দেখেন বেশ কয়েকজনের একই সমস্যা। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তারা মামুনের দোকানে এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে খবর দেন। প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর মামুনকে আটক করে প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আরিফ ও রফিকুলকেও আটক করে মতিহার থানা পুলিশ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান করার জন্য বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (পিএসসি) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পিএসসি শিক্ষার্থীদের পুনরায় আবেদনের সুযোগ দেয়।
প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, 'মামুন ফরম পূরণের নামে যেটা করেছে তা গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি শিক্ষার্থীরা না জানালে অসংখ্য শিক্ষার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারত না।'
প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে মামুন বলেন, 'আমার ভুল হয়েছে। আমি সব টাকা ফিরিয়ে দেব।' এ সময় মামুন প্রক্টর দপ্তরে ৮০ হাজার টাকা ফেরত দেন এবং বাকি টাকা শিগগিরই পরিশোধ করবেন বলে জানান।