মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে তড়িঘড়ি করে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ভবন সম্প্রসারণের ছাদ ঢালাই কাজ শেষ করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১২ জুলাই) ভোরে কাজটি শেষ করা হয়েছে।
এর আগে ১১ জুলাই সকালে বৃষ্টির মাঝে এ কাজ শুরু করে রাত ৯টা পর্যন্ত চলেছিল। বৃষ্টিতে ও রাতে ঢালাই কাজ না করার ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছিল। তা সত্বেও ঠিকাদার কাজটি করেছেন বলে জানা গেছে।
নেত্রকোনা ফ্যাসিলেটিজ বিভাগ কর্তৃপক্ষ জানান, এ বিভাগের অর্থায়নে চলতি অর্থ বছরে প্রায় ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের খালিয়াজুরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন তলা ভবনের ৪র্থ তলা সম্প্রসারণ কাজ। ওই নির্মাণ কাজটি পেয়েছেন নেত্রকোনা সদরের জয়নগর এলাকার তাজউদ্দিন ফরাস সেন্টু নামের এক ঠিকাদার।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, সরেজমিনে থেকে ওই কাজটি করাচ্ছেন খালিয়াজুরীর লেপসিয়া গ্রামের ঠিকাদার আবু সাইদ। এ নির্মাণ কাজের ছাদ ঢালাইয়ে ব্যবহৃত ইটের সুড়কির বদলে ডাস্ট (ইটের গুড়া) দেয়া হয়েছে অনেক বেশি। বাড়তি লাভ গুণতে ঠিকাদার ওই কাজটি তড়িঘড়ি করে করিয়েছেন ১১ জুলাই ও ১২ জুলাই মুষলধারের বৃষ্টিতে ও রাতের আধারে। কাজটি বৃষ্টিতে ও রাতের আঁধারে না করতে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হলেও ঠিকাদার এ কথা না মেনেই কাজটি করিয়েছেন। বৃষ্টিতে ঢালাই কাজ করলে সিমেন্ট পানিতে ধুয়ে চলে যায় বলে এ সময় কাজ বন্ধ রাখার নিয়মটিও ওই ঠিকাদার মানেননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস এসব অনিয়মের বিষয় নিশ্চিত করে জানান, বিদ্যালয়টিতে ওই নির্মাণ কাজ চলছে প্রায় দুমাস ধরে। কিন্তু কাজটি কীভাবে হবে এ এস্টিমেট বার বার চাইলেও ঠিকাদার আজও তাকে তা দেয়নি।
সরেজমিনে থাকা ঠিকাদার আবু সাইদ এ ব্যাপারে বলেন, ‘কাজটি করা ভুল হয়েছে। ভুল তো মানুষেরই হয়। তাই এটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর আপনার সঙ্গে আমি দেখা করবো।’ এমনটি বলে তিনি এ প্রতিবেদককে ম্যানেজ করারও ইঙ্গিতও দেন।
এ কাজের মূল ঠিকাদার তাজউদ্দিন ফরাস সেন্টু বলেন, ‘দিনভর এভাবে বৃষ্টি থাকবে তা কাজের শুরুতে বুঝা যায়নি। তবে, বৃষ্টিতে কাজ করলেও কাজের গুণগত মান খারাপ হয়নি।’
নেত্রকোনা ফ্যাসিলেটিজ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল বাতেন বলেন, ‘এ বিভাগের লোকবল কম। খালিয়াজুরীর ওই ঢালাই কাজের তদারকিতে পাঠানো হয়েছিল দুর্গাপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী সামিউল বশিরকে। তার মাধ্যমে তিনি (সহকারী প্রকৌশলী) জেনেছেন এখানে কাজ ভালোই হয়েছে।’
খালিয়াজুরী উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মো. এরশাদুল আহমেদ উজ্জ্বল জানান, নিয়মের বাইরে বৃষ্টিতে ও রাতে ওই ঢালাই কাজ হয়েছে এ অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এমন কাজ কেন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।