বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের ফান্ডে প্রায় ৬৪৫ কোটি টাকা জমা আছে। এর মধ্যে প্রায় ৬১০ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করা ও বাকি ২৫ কোটি টাকা শিগগিরই ফিক্সড ডিপোজিট করা হবে। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে জন্মের পর থেকে এ পর্যন্ত সরকার থেকে অবসর সুবিধা বোর্ডকে সিড মানি দেয়া হয়েছে প্রায় ৬২৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই দিয়েছেন ৫৩৫ কোটি টাকা। ২০১৬, ২০১৮ ও ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে তিন দফায় তিনি এই টাকা দেন।
এছাড়াও গত দশ বছরে কয়েকশ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেন যা ইতোমধ্যে বিতরণ হয়ে গেছে। বিএনপি আমলে ৮৯ কোটি টাকা সিড মানি পাওয়া গেছে পাঁচবারে (২০ কোটি করে তিনবার একবার ১৯ কোটি ও আরেকবার ১০কোটি)।
সরকারের দেয়া সিড মানির বাইরে মানে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে মাসে মাসে কর্তন করা টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করার কোনো বিধান নেই। অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে চাঁদা বাবদ কর্তন করা এক টাকাও স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা নেই। তারা এ বিধানটি মানছেন।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী সিড মানির টাকাগুলো ফিক্সড ডিপোজিট করা বাধ্যতামূলক এবং এই ডিপোজিট থেকে মুনাফার ৭৫ শতাংশ টাকা শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। মুনাফার বাকি ২৫ শতাংশ টাকা মূল টাকার সাথে যুক্ত করে ফিক্সড ডিপোজিট করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সিড মানি খরচ করা বা বিতরণ করা যাবে না।
কোন ব্যাংকে কত টাকা:
অবসর সুবিধা বোর্ড ও অন্যান্য সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকে চারশ দুই কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও জনতা ব্যাংকে ৭৮ কোটি এবং বেসরকারি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা আছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা পেনশন পান না। তার বদলে তাদেরকে অবসরের পর এককালীন কিছু টাকা দেয়া হয়। এই টাকার পাবার জন্য চাকরিজীবনের প্রতিমাসের এমপিও থেকে ৬ শতাংশ হারে চাঁদা বাবদ কর্তন করা হয়।
এছাড়া কল্যাণট্রাস্ট নামে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আরেকটি ফান্ড আছে। এই খাতে চাঁদা কর্তন বাধ্যতামূলক না। কেউ ইচ্ছে করলে চাঁদা নাও দিতে পারার বিধান রাখা হয়েছে। তবে, এই ফান্ডের জন্য চাঁদা বাবদ টাকা কর্তন করা হয় না এমন কোনো নজির দৈনিক শিক্ষার হাতে নেই। প্রতিমাসের এমপিওর চেক ব্যাংকে পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে অবসর ও কল্যাণ ফান্ডের জন্য চাঁদা বাবদ ৬ ও ৪ এই মোট দশ শতাংশ হারে কর্তন করা হয়।
কল্যাণট্রাস্টের ফান্ডে কত টাকা জমা আছে তা জানা যায়নি। কল্যাণট্রাস্টে শিক্ষকদের জমানো টাকা এফডিআর করা যায় না।