বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নের শেষ সময়সীমা ২৩ আগস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক |

২৩ আগস্টের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন না করলে বেসরকারি হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হবে। শনিবার (৮ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও আক্রান্ত রোগীদের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণের জন্য গঠিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব ও উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডা. মো. শিব্বির আহমেদ বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে যেসব হাসপাতাল, ক্লিনিক, ব্লাড ব্যাংক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে সেগুলোর নবায়ন প্রক্রিয়া এই মাসের ২৩ তারিখের মধ্যে শেষ করতে হবে। এর আগে সরকার এক মাস সময় দিয়েছিল। এর পরে কোনো প্রতিষ্ঠানকেই লাইসেন্স ছাড়া কার্যক্রম চালাতে দেয়া হবে না; সে যত বড় শক্তিশালীই হোক না কেন। এটা সরকারের পরিষ্কার নির্দেশনা। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকেও এ বিষয়ে আগে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে যারা লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে তা দ্রুত সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সারপ্রাইজ ভিজিট করব। বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে যে কমিটি করা আছে তাদের কাছে সরকারের অনুমোদন নিয়ে একটা চিঠি পাঠানো হবে। এটা হয়তো কেবিনেট থেকে করা হবে, যাতে করে ওই কমিটি জেলার বিভিন্ন জায়গার প্রতিষ্ঠানগুলো ভিজিট করতে পারে।’

ডা. শিব্বির আহমেদ বলেন, ‘মোদ্দা কথা হলো, আমরা লাইসেন্স ছাড়া কোনো ল্যাবরেটরি, ক্লিনিক ও হাসপাতাল একদিনও চালাতে দেবো না। আজকে যদি তাদের মেয়াদ শেষ হয়ে থাকে, তবে কাল থেকে তারা অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে।’

শনিবার ছিল কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও আক্রান্ত রোগীদের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণের জন্য গঠিত কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক। পরবর্তী বৈঠক ১৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে ২৩ জুলাই দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধ ও এ সংক্রান্ত চিকিৎসা কার্যক্রম বাস্তবায়নের অগ্রগতি তদারকি করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য) মো. মোস্তফা কামালকে ৯ সদস্যের টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক করা হয়।

২৩ জুলাই স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি এক আদেশে বলা হয়, কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও আক্রান্ত রোগীদের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত জারি করা পরিপত্র, প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশনা ও যেসব কমিটি গঠিত হয়েছে তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন অগ্রগতি তদারকি করার জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (প্রশাসন), স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব (প্রশাসন), অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব (প্রশাসন), জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (প্রশাসন), স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা) ও আইডিসিআরের পরিচালক। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (জনস্বাস্থ্য-১) টাক্সফোর্স কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে আদেশে বলা হয়ে।

এই টাস্কফোর্সের কর্মপরিধির বিষয়েও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, টাস্কফোর্সকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারি করা পরিপত্র, প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশনা ও যেসব কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন অগ্রগতি তদারকি করবে। টাস্কফোর্স তাৎক্ষণিকভাবে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত অভিযোগ ও তথ্য পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেবে।

এছাড়া বিভিন্ন কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্তের সমন্বয় করা, যেসব হাসপাতাল ও ল্যাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয় তাদের লাইসেন্সের যথার্থতা পরীক্ষা করা, কোভিড-১৯ এর পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি যথাযথভাবে আদায় করা হচ্ছে কি না তা মনিটর করা, যেসব হাসপাতালে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয় সেখানে পর্যাপ্ত জনবল ও পরীক্ষার যথাযথ ফ্যাসিলিটিজ আছে কি-না টাস্কফোর্স তা যাচাই করবে বলে জানানো হয় আদেশে।

এই টাস্কফোর্স কমিটি ৫০ শয্যার বেশি হাসপাতালগুলোতে কাজ করবে। আর টাস্কফোর্স কমপক্ষে প্রতি দুই মাসে একবার সভা করবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নিবন্ধন ফি এবং নিবন্ধন নবায়ন ফি ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার ও সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স নবায়নের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিস্তারিত বিবরণ, সিটি করপোরেশনের ছাড়পত্র, কর সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য নথি প্রয়োজন। 

এসব হাসপাতালকে নিয়মিত নোটিশ দেওয়ার পাশাপাশি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু এসব কাগজপত্র দিতে পারে না বলে লাইসেন্স নবায়ন করতে পারে না বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি রিজেন্ট হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অভিযানের পরে আলোচনায় আসে লাইসেন্স নবায়নের বিষয়টি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0095579624176025