রাজধানীর মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইমাম হোসেন তিন বছর ধরে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ আমলে নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুককে তদন্ত কর্মকর্তা ও আজিমপুর গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ হাসিবুর রহমানকে সদস্য করা হয়েছে।
অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষা-২০১৪-তে আদায়কৃত কেন্দ্র ফি বাবদ ২৪ লাখ টাকা অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। প্রত্যবেক্ষকদের রুম ডিউটি হিসেবে মাত্র ৫২০ ও কর্মচারীদের ২৬০ টাকা হারে দেওয়া হয়। অথচ প্রত্যবেক্ষকদের ফাঁকা স্থানে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে সরকারি কোষাগারে ১০ শতাংশ টাকা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সে নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। এ ছাড়া প্রবেশপত্র বিতরণের সময় প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে প্রায় কয়েক লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়। অন্যদিকে বিধি লঙ্ঘন করে প্রতি বর্ষেই ভর্তি ও ফরম পূরণ বাবদ ২১০ টাকা আদায় করা হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে। অভিযোগ রয়েছে, ইচ্ছামতো কমিটি গঠন করে সুবিধামতো অর্থ বণ্টন করছেন অধ্যক্ষ। এমন নানা অনিয়মের মোট এগার দফা অভিযোগ করা হয়েছে অধ্যক্ষ ইমাম হোসেনের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে কলেজের শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক নিয়োগ করে সব ফান্ডের টাকা অধ্যক্ষ মো. ইমাম হোসেন আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন বলে শিক্ষকদের একটি অংশ নায়েম মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ করেছেন। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত চেকের মাধ্যমে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগে বলা হয়। বাঙলা কলেজের এক শিক্ষিকা মাউশি মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করে তদন্ত কমিটির সদস্য হাসিবুর রহমানের রহস্যজনক আচরণের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, হাসিবুর রহমান দায়সারা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত না করে অন্যায়কে আড়ালে রেখে রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। অধ্যক্ষ মো. ইমাম হোসেন এসব অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, কেউ অভিযোগ দিতেই পারে। অভিযোগের বিষয়টি সরকার তদন্ত করছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। নায়েমের মহাপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এমন অভিযোগের পর আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। আশা করছি এ মাসেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন