ফ্রান্সের তৃতীয় বৃহৎ ধনী ফ্রাংকোজ পিনো। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকায় বিশ্বের ৩০তম বিলিয়নেয়ার তিনি। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৩০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। তবে বিলাস পণ্যের এ শীর্ষ ব্যবসায়ী একজন চিত্রকর্ম সংগ্রাহক হিসেবেও সমধিক পরিচিত। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত চিত্রকর্মের সংগ্রহ তাঁর হাতেই রয়েছে। রোববার (১৩ অক্টোবর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মুহাম্মদ শরীফ হোসেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্কুল জীবনেই বাবার কাঠের ব্যবসায় সময় দিতেন ফ্রাংকোজ পিনো। এভাবে কাজের মাঝেই যেন খুঁজে ফেরেন কৈশোরের আনন্দ। মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুলের পড়ালেখা ছেড়ে পুরোদমে মনোযোগ দেন বাবার ব্যবসায়। ক্রমান্বয়ে নিজেকে ঝালিয়ে নেন। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সের রেনেস শহরে নিজেই গড়ে তোলেন ‘এটাব্লিশমেন্টস পিনো’ নামে কাঠ ব্যবসার কম্পানি। কাঠ আমদানি করে তিনি তা খুচরা বাজারে বিক্রি করতেন। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে কম্পানিটি প্যারিস স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। দুই বছর পর তিনি খুচরা পণ্যের ব্যবসাও শুরু করেন।
১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে কিনে নেনে ফ্রান্সের মেইল অর্ডার কম্পানি রেডোটে এবং চেইন স্টর লে প্রিন্টেমপস। এভাবে ক্রমান্বয়ে খুচরা ব্যবসায় আধিপত্য বাড়াতে থাকেন ফ্রাংকোজ পিনো। এরপর ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ইতালির ফ্যাশন হাউস গুচি গ্রুপের ৪২ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়ে তিনি বিলাস পণ্যের ব্যবসায় মনোযোগ দেন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কাঠের ব্যবসা বিক্রি করে দেন। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে কম্পানিটি ‘কেরিং’ নামে যাত্রা শুরু করে। একে একে গড়ে তোলেন স্যাইন্ট লরেন্ট, অ্যালেক্সেন্ডার মেককুইন এবং ঘড়ির ব্র্যান্ড জিরার্ড-পেরেগক্সের মতো বিলাস পণ্যের অনেক শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড। তবে জিরার্ড-পেরেগক্স নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁর ছেলে ফ্রাংকোজ-হেনরি। একজন শিল্পপ্রেমী হিসেবেও পিনোর দারুণ খ্যাতি রয়েছে। তিনি ও তাঁর পরিবারের সংগ্রহে রয়েছে তিন হাজার পিস আর্ট। যার মধ্যে আছে পিকাসো, মন্দ্রিয়ান ও কুনসের মতো বিখ্যাত সব চিত্রকর্ম। যার মূল্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। ৮৩ বছর বয়সী পিনোর জন্ম ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ২১ আগস্ট ফ্রান্সের প্রশাসনিক অঞ্চল লেস চেম্পস গেরাক্সে। এখনো তিনি কাজকর্মে পুরোদমে সময় দেন। যদিও কম্পানির মূল দায়িত্ব সন্তান ফ্রাংকোজ হেনরির হাতে দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তিনি এখনো হোল্ডিং কম্পানি আর্টেমিস এসএর পরিচালক হিসেবে আছেন। ক্রিস্টাইর চেয়ারম্যান ও খুচরা জায়ান্ট কেরিংয়ের অনারারি চেয়ারম্যানও তিনি।
ফ্রাংকোজ পিনো বলেন, টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে একটি মৌলিক পরিবর্তন, যা পুরো কাঠামোকেই পুনর্গঠন করে। বর্তমানে অনেক কম্পানি আছে যারা ভবিষ্যতে আধিপত্য বিস্তার করবে, কারণ তারা গতিধারা বুঝতে পেরেছে। ফোর্বস, বিজনেস ইনসাইডার, উইকিপিডিয়া।