দেশের পাবলিক, প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং কৃষি—সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে কিছুদিনের মধ্যেই। এ বছর বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফর্মের মূল্য বেশ বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশে এখন সব মিলিয়ে প্রায় ৪৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রত্যেকটিতেই ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে মেলে ভর্তির সুযোগ। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই দেখা যায়, তাদের ভর্তি পরীক্ষার নিয়মাবলি মেনে প্রত্যেক শিক্ষার্থী সর্বনিম্ন দুটি থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারে। রোববার (১৮ আগস্ট) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন মিতা কলমদার।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিট মোট ১০টি এবং তার মধ্যে ৫টাতে ভর্তির আবেদন ফি ৬০০ টাকা, বাকি ৫টাতে ৪০০ টাকা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিট ৩টি এবং প্রতিটির আবেদন ফি প্রায় ২০০০ টাকা। ভর্তি পরীক্ষা এখন এমন একটা যুদ্ধ হয়ে উঠেছে যে, একটা বা দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে নিশ্চিত থাকা যায় না পড়ার সুযোগ পাওয়া যাবে কি না! এক্ষেত্রে দেশব্যাপী ঘুরে ঘুরে পরীক্ষা দিতে ভর্তিচ্ছুদের।
বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, অনলাইনে নিজে নিজে দরখাস্ত করার মতো ব্যবস্থা বা অবস্থা বেশিরভাগেরই থাকে না বা অনেকেরই হয়নি এখনো। সেজন্য স্থানবিশেষে প্রতি ইউনিটে আবেদন করার জন্য কম্পিউটার অপারেটরকে দিতে হয় সর্বনিম্ন ১০০ থেকে ২০০ টাকা। তাই এখানে একটা ক্ষুদ্র হিসাব করে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। একজন ভর্তিচ্ছু যদি চার-পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১০/১২টি ইউনিটে পরীক্ষা দেয় তাহলে তার আবেদন ফি, অনলাইন দোকানের খরচ এবং যাতায়াত সব মিলিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন সন্তান যদি সর্বোচ্চ ৫টা বিশ্ববিদ্যালয়েও পরীক্ষা দিতে আগ্রহী থাকে, তার পরিবারের জন্য এত টাকা জোগাড় করা কতখানি কষ্টের হবে। মধ্যবিত্তরাই যেখানে হিমশিম খেয়ে যায়, সেখানে নিম্নবিত্তের কত স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে আর্থিক সামর্থ্যের অভাবে; এটা বুঝে প্রত্যেকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভর্তি ফর্মের মূল্য কমানো উচিত।
লেখক : লোকপ্রশাসন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।