বরাবরের মতোই এবারও ভর্তি পরীক্ষা হবে না। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে একাদশ শ্রেণিতে। কোন কলেজ কেন চয়েস দেবেন ভর্তিচ্ছুকরা? কোন কোন বিষয় বিবেচনায় নেয়া জরুরি? দশটির চয়েসক্রম কিভাবে দেবেন? এসব বিষয় নিয়ে দৈনিক শিক্ষার ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে পরামর্শ দিয়েছেন দেশ সেরা ঢাকা কলেজসহ কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষ।
করোনাকালের ভর্তিতে তাঁরা নিজ নিজ বাড়ির কাছের কলেজকে প্রাধান্য দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁদের মতে, দূরের কলেজে ভর্তি হলে শিক্ষার্থীরা বাবা-মার থেকে দূরে সরে যাবে। অনেক ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টা দূরের কলেজে ভর্তি হওয়ার ফলেও যাতায়াতের শিক্ষার্থীদের অনেক সময় চলে যায়। তাছাড়া করোনাকালে যাতায়াতে বাড়তি অসুবিধা। এতে, শিক্ষার্থীদের ওপর পরবর্তী সময়ে চাপ পড়বে বলেও মনে করেন অধ্যক্ষরা।
শনিবার (৮ আগস্ট) দৈনিক শিক্ষাডটকমের লাইভে অংশ নেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ নেহাল আহমেদ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর আলী এবং মোহাম্মদপুরের কিশালয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমতুল্লাহ। লাইভ সঞ্চালনা করেন দৈনিক শিক্ষাডটকমের সম্পাদক ও এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) এর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান খান।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ নেহাল আহমেদ বলেন, স্বাভাবিকভাবেই স্কুল থেকে বেরিয় একটি ছেলে অথবা মেয়ে যখন একটি কলেজে যায় তখন তার মানসিক বিকাশের ওপর অন্যরকম প্রভাব পড়ে, সে নিজেকে প্রাপ্তবয়স্ক ভাবা শুরু করে। কিন্তু আমরা জানি ১৬-১৭ বছরের একজন শিক্ষার্থী অনেক ভুল করতে পারে। তাই, এ মুহূর্তে অভিভাবকরা একটি ভালো ভূমিকা পালন করতে পারেন। আমি একজন অধ্যক্ষ এবং একজন পিতা হিসেবে বলবো উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থীকে বাবা-মায়ের সাথে রাখা ভালো। তাই আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের বাসার আশেপাশের কলেজে ভর্তি করাটাই সবচেয়ে ভালো হবে।
অধ্যক্ষ বলেন, কলেজ মাইগ্রেসনের সময়ও কিছু সমস্যায় পড়ে শিক্ষার্থীরা। তাই একেকজনের যো দশটি কলেজ চয়েস দেয়ার সুযোগ রয়েছে সেখানে খুব ভেবেচিন্তে চয়েস দিতে হবে।
অধ্যক্ষ নেহাল আহমেদ বলেন, এসএসসি ও এইচএসসির বিজ্ঞান বিভাগের সিলেবাস-কারিকুলামে আকাশ-পাতাল পার্থক্য, তাই ভেবেচিন্তে বিভাগ নির্বাচন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভালো কলেজগুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের অনেক সময় আগ্রহ থাকে তবে একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য অনেক সময় চলে যায়। শিক্ষার্থীরা দূরের কলেজে ক্লাস করে বেশিরভাগ সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। যা পরবর্তীতে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। ঢাকা কলেজে আসন সংখ্যা একহাজার ২০০। প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেলে আসন সংখ্যা খুবই কম। তিনশ’র বেশি থাকার সুযোগ দেয়া যায় না। বাকীদের মেসসহ বিভিন্নভাবে থাকতে হয়। তাই ভর্তির সময় বাইরে শুনলেই হবে না যে অমুক কলেজে হোস্টেল সুবিধা আছে। বাস্তবে কতজন হোস্টেল সুবিধা পাবে তা জেনে নেয়া উচিত আগেই।
মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর আলী বলেন, দেশের সব জায়গায় ভালো প্রতিষ্ঠান আছে। তবে করোনাকালে সবার উচিত বাসার কাছের প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রাধান্য দেয়া। আমার প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯০০ আসন রয়েছে। আমি প্রতিষ্ঠান আশেপাশে শিক্ষার্থীদের আমার কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করি। কখনোই দূরের কোনো শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে উদ্ভূত করি না। দূরে ভর্তি হলে শিক্ষার্থীরা যাতায়াত নিয়ে একটি সংকট পড়বে। যে সংকট করোনাকালে আরো প্রকট হবে। তাই, তাদের প্রতি পরামর্শ থাকবে নিজে প্রতিষ্ঠাতারা ভালো মনে করে সেটিতেই যেন তারা ভর্তি হয়।
মোহাম্মদপুরের কিশালয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে তারা যেন কাছাকাছি কলেজে ভর্তি হয়। দূরের কলেজে ভর্তি হলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অসুবিধা হবে। এছাড়া অন্যান্য অসুবিধা দেখা দিতে পারে। ছাত্র-ছাত্রী উভয়ের ক্ষেত্রে এসব সমস্যা দেখা দেবে। আর মেয়েরা অনেক সময় দূরের কলেজে ভর্তি হলে উত্ত্যক্তের শিকার হয়। তাই শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে নিকটবর্তী ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার।
তিনি বলেন, তার কলেজটি মেয়েদের পড়াশোনার জন্য অত্যন্ত ভালো পরিবেশ।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।