খবরের সঙ্গে যে ছবিটি আছে, সেটাকে শিশু পার্কের শিশুদের খেলা করার স্লিপার মনে হলেও বাস্তবে এটি একটি লোহার সেতু। এ সেতুটির অ্যাঙ্গেলে মরিচা ধরে মাঝখান দিয়ে ভেঙে পড়ে দুই দিক উঁচু হয়ে আছে। মরিচা ধরা লোহার অ্যাঙ্গেলের পাতের ওপর কোনরকম এটি ঝুলে আছে। তারপরও চরম ঝুঁকি নিয়ে এই সেতুর উপর দিয়েই পারাপার হচ্ছেন স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ তিন গ্রামের মানুষ। এই সেতু পার হতে গিয়ে পা পিছলে অনেকেই দুর্ঘটনার হচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান,পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বালিয়াতলী ইউনিয়নের খেয়ার খালের ওপর ১৯৯৪-৯৫ খ্রিষ্টাব্দে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ব্রিজটি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে হঠাৎ ভেঙে পড়ে। বড়বালিয়াতলী মাঝগ্রাম, নয়াপাড়া, দক্ষিণ বড়বালিয়াতলী গ্রামের হাজারো মানুষের ভরসা এই ব্রিজ। বড়বালিয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বড়বালিয়াতলী ইয়াকুব আলী তালুকদার ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসার অন্তত দেড়শ শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই ব্রিজ পার হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করে।
স্কুল শিক্ষার্থী শারমিন, সোনিয়া, মহিমা ,দেলোয়ার, তুহিন মিয়া, সাইদুর জানায়,বর্ষা হইলে ব্রিজ পিচ্চিল হইয়া যায়। তহন বইয়া সোচ্চারি দিয়া ব্রিজের ওই পাড়ে যাই। মাঝে মাঝেই বই,খাতা, স্কুল ব্যাগ ব্রিজের নিচে পড়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম ও আলিম মিয়া বলেন, অন্তত তিন শতাধিক পরিবারের লোকজন প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। ক্ষেতের ফসল বিক্রির জন্য নেয়া যায় না। যানবাহন চলে না। স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়। দুই বছর ধরে সেতুটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। কিন্তু এটির মেরামত কিংবা বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়নি।
বড়বালিয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, বর্ষায় সেতুটি দিয়ে চলাচল বিপদজনক। কাদা পানিতে পিচ্ছিল হয়ে থাকায় পা পিছলে প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবির দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, খালের নোনা পানির কারণে ব্রিজের নিচের লোহার অ্যাঙ্গেল ও খুঁটি মরিচা পড়ে ক্ষয়ে ভেঙে যাওয়ায় ব্রিজটি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে দেবে যায়। কলাপাড়া এলজিইডি প্রকৌশলীসহ উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে লিখিতভাবে ব্রিজটি মেরামত বা অপসারণ করে কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, খেয়ার খালের আয়রন সেতুটি অপসারণ করে গার্ডার ব্রিজ করার প্রস্তাবনা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।