আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ও বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এম এ ওয়াদুদ ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ১ আগস্ট চাঁদপুর জেলার রাঢ়ির চর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তাঁর একমাত্র মেয়ে এবং ডায়াবেটিক ফুট সার্জারিতে দেশের একমাত্র বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসক ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ (টিপু) তাঁর একমাত্র ছেলে।
ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ গণতান্ত্রিক যুবলীগ (১৯৪৮), পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ (১৯৪৮) ও কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলার (১৯৫৬) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ (১৯৪৯), সাপ্তাহিক ইত্তেফাক (১৯৪৯) ও দৈনিক ইত্তেফাক (১৯৫৩) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন তিনি।
ভাষা সৈনিক এম এ ওয়াদুদ ১৯৫৩-১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রাদেশিক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দুইবার নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১ বার প্রাদেশিক ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকের দায়িত্বও তিনি নিষ্ঠা ও সাফল্যের সাথে পালন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে একবার এবং ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত দ্বিতীয়বার কারাবরণ করেন।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করার পর ছাত্র আন্দোলনকে স্থিমিত করার জন্য পুনরায় ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদকে কারারুদ্ধ করা হয়। ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে তৎকালীন শাসকদের রুদ্ররোষের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপন করতে তিনি বাধ্য হন। ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে বঙ্গবন্ধুসহ এম এ ওয়াদুদকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।
১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে সামরিক সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে মন্ত্রীত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য তিন বার বিভিন্ন মেয়াদে কারাবরণ করেন ভাষাবিদ। সামরিক শাসনের সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে বারবার মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হয়।
এম এ ওয়াদুদ ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশভাগের পর থেকে ১৯৭১ পেরিয়ে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ আগস্টে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাঙালির ভাষা, স্বাধীকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির সব আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি।