ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে এবারও অবৈধভাবে ৪৫৯ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ঘোষিত আসনের বাইরে নানা প্রক্রিয়ায় নানা কৌশলে ছাত্রী ভর্তি করা হয়েছে। এক শাখায় শূন্য আসন দেখিয়ে আরেক শাখায় ভর্তি করা হয়েছে। অতিরিক্ত ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে আবেদন না করা বেশ কয়েকজন আছে। লটারি ও লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীও ভর্তি করা হয়েছে। এ ধরনের ভর্তিকে ‘অবৈধ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এক দফা অভিযোগ তদন্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্ত দল। সংশ্লিষ্ট সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
জানা যায়, এই অবৈধ ভর্তির নেপথ্যে প্রতিষ্ঠানের সাবেক এক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং গভর্নিং বডির কয়েক সদস্য মূল ভূমিকা পালন করেছেন। ভর্তির ক্ষেত্রে অর্থের লেনদেনের অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। গত জানুয়ারিতে এই ভর্তির সময়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সহকারী অধ্যাপক হাসিনা বেগম। সোমবার বিকালে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এবং গভর্নিং বডি যদি চান তাহলে ভর্তির ক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের করার কিছু থাকে না। চাইলেও এ ধরনের পদে থেকে বাধা দেয়া যায় না। তার দায়িত্ব নেয়ার আগেই এসব ঠিকঠাক করে রাখা হয়েছিল। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর কেবল ভর্তিটা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিনি কেবল রাবার স্ট্যাম্পের ভূমিকা পালন করেছেন।
তদন্তকারীরা জানান, অতিরিক্ত ভর্তির অভিযোগ বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে দাখিল করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও অভিযোগ গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ভর্তি বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের পর তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয় মাউশি অধিদপ্তরকে। অধিদপ্তর ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির প্রধান করা হয়েছে মাউশির ঢাকা অঞ্চলের পরিচালককে। এছাড়া কলেজ শাখার উপ-পরিচালক এবং কলেজ শাখার সহকারী পরিচালক আছেন ওই কমিটিতে।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে এবার প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৪৫৯ জন ছাত্রী অতিরিক্ত ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের তদন্ত দলের কাছে ভর্তির যে সব তথ্য দেয়া হয়েছে তাতে কমিটি কেবল ৩৬৮ জন ছাত্রী ভর্তির তথ্য পেয়েছে। সে অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ভর্তি করা হয়েছে প্রথম শ্রেণিতে ১৬০ জন। এছাড়া দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৫৬ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ৯৫ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ৩৯ জন, পঞ্চম শ্রেণিতে ৩১ জন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১১ জন, সপ্তমে ২৬ জন, অষ্টমে ২ জন, নবমে বিজ্ঞান বিভাগে ৭ জন ভর্তি করা হয়েছে।