ভিসি প্রোভিসি ট্রেজারার ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠার পর পেরিয়ে গেছে ২৩ বছর। অথচ এই দীর্ঘ সময়ে প্রোভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগ দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। আর টানা দুই মেয়াদে অর্থাৎ আট বছর হলো কোনো উপাচার্য নেই। শীর্ষ পদে সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত কেউ না থাকায় উত্তরায় অবস্থিত এই এশিয়ান ইউনিভার্সিটি কীভাবে চলছে তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও (ইউজিসি)। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে যেসব শিক্ষার্থী ডিগ্রি শেষ করেছে তাদের সনদে কে স্বাক্ষর করছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ইউজিসির কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত বৈধ ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারার থাকতে হবে। কিন্তু এ আইন মানার প্রতি তেমন আগ্রহ দেখায়নি বিশ্ববিদ্যালয়টি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য রেখে নিজ পরিবারের সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে ড. আবদুল্লাহ এম সাদেককে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব পালন করছেন। তার ছেলে ড. মুহাম্মদ জাফর সাদেক বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। একই সাথে তিনি স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন।

ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ডিপার্টমেন্ট অব কম্পিউটার সায়েন্স এবং স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংসহ দুটি বিভাগের চেয়ারম্যানও তিনি। বিশ্ববিদ্যলয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ড. মো. মুহসিন উদ্দিন স্কুল অব আর্টস এর ডিন হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

ইউজিসি বলছে, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের কোনো লাভজনক পদে চাকরি করার সুযোগ নেই। কিন্তু ড. মুহাম্মদ জাফর সাদেক ট্রাস্টি বোর্ডে থেকেও চাকরি করে বেতন ভাতা নিচ্ছেন। একই সুবিধা নিয়েছেন ট্রাস্টি বোর্ডের অপর সদস্যও। যা অনৈতিক ও বেআইনি। ইউজিসি থেকে এ ধরনের নির্দেশনা জারি করলেও বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ইউজিসি বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে উপাচার্য হিসেবে তিনজনের নামের প্রস্তাব ইউজিসিতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছেন প্রতিষ্ঠাতা ড. আবদুল্লাহ এম সাদেক। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী তিনি উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য কী-না তা যাচাই করা হচ্ছে। তিনি কীভাবে লেকচারার থেকে অধ্যাপক হলেন তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকার কর্তৃক উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে এবং ভারপ্রাপ্ত ভিসিকে নিয়োগ দিতে নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

ইউজিসির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ এসেছে। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার উদ্যোগও নিয়েছে ইউজিসি। নানা অনিয়ম ও দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের অনুমতি দেয়নি সরকার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শাহ আলম বলেন, ভিসি নিয়োগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আগ্রহ রয়েছে। যোগ্য প্রার্থী দিলেও সেখান থেকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না।

ভিসি হিসেবে নিয়োগের যোগ্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ভিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে চাকরি শুরু করেন। পরে মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। শিক্ষার্থীদের সনদে ভারপ্রাপ্ত ভিসি স্বাক্ষর করলেই চলে। সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত ভিসি সনদে স্বাক্ষর করতে হবে এমন কোনো তথ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে নেই বলে তিনি জানান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033459663391113