এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিনে ২০১৮ সালের প্রশ্ন, নতুন ও পুরাতন সিলেবাসের প্রশ্ন এবং প্রশ্নপত্রে ভুলসহ দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত তিনটি ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন। কেন ভুল হলো, কীভাবে হলো, কারা দায়ী--তদন্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানদের।
শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। এদিন দুপুরে দৈনিক শিক্ষায় ‘পুরনো প্রশ্নে পরীক্ষা, অভিভাবকদের ক্ষোভ’ এবং ‘হাজার বছর আগের সিলেবাসে এসএসসির বাংলা পরীক্ষা!’শিরানামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর একদিন আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘শ্রুতিলেখক না পাওয়ায় এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছে না হাসিব’ শিরোনামে আরেকটি মানবিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক শিক্ষা। শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘আজ ২ ফেব্রুয়ারি দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত প্রশ্নপত্রে ভুল ও পুরনো প্রশ্নে পরীক্ষাসহ দুটি প্রতিবেদন এবং গতকাল প্রকাশিত প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীকে শ্রুতিলেখক না দেয়ার ঘটনাসমূহ তদন্ত করে মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে।’
রাজধানীর মিরপুরের শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্রে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া এবং ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে ১০১৯ সালের সিলেবাস লেখা প্রশ্নে বাংলা ১ম পত্রের এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ করতে বলা হয়েছে। শনিবার দুপুরে দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত হয়। এছাড়া শ্রুতি লেখক না পাওয়ায় আল হাসিবের এসএসসি পরীক্ষা দিতে না পারার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষাসচিব।
তিনি দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ভুলগুলো কেন হয়েছে তা তদন্ত করে মন্ত্রণালয়কে জানাতে বোর্ডগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর মিরপুরের শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ কেন্দ্রে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সৃজনশীল অংশের প্রশ্নটি ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে দেয়ায় পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েকজন পরীক্ষার্থী বিষয়টি কক্ষ পরিদর্শকদের নজরে আনে। পরে দুপুর বারোটার দিকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে নতুন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন একজন শিক্ষক। এদিকে বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে মারাত্মক ভুল ধরা পড়েছে। শনিবার অনুষ্ঠিত ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে ‘১০১৯ সালের সিলেবাস’ লেখা প্রশ্নে বাংলা ১ম পত্রের এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়া হয়। কিন্তু এখন ২০১৯ সাল চলছে।
এছাড়াও সাভারের একটি কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র কম হওয়ায় ফটোকপি করা প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে শুক্রবার ‘শ্রুতিলেখক না পাওয়ায় এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছে না হাসিব’ শিরোনামে দৈনিক শিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর আজ শনিবার সকালে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার প্রতিবন্ধী হাসিবকে কেন পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি তা জানাতে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবকে জানতে চান। এরপর ওই কেন্দ্রসচিব হাসিবের বাবা প্রধানশিক্ষক মতিউরের কাছে ফোন করেন। মতিউরকে আগামীকাল (রোববার) ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুরনো প্রশ্নে পরীক্ষা, অভিভাবকদের ক্ষোভ