ঐতিহ্যবাহী শিবালয় অক্সফোর্ড একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মনোয়নের ভুয়া তথ্যের বিষয়টি অবশেষে একাধিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তবে ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক নানা হয়রানিমূলক তত্পরতা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, উক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠনকালে গত ২০১৯ সালের ৬ মার্চ এ বি এম জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী নামের এক ব্যক্তিকে ভুয়া তথ্যে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আবু বকর সিদ্দিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইএনও) বরাবর অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে একই বছরের ২ নভেম্বর একটি দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের পরিপেক্ষিতে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনওর নির্দেশে উপজেলা সিনিয়র মত্স্য কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা মিলেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তারপরও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় কয়েকজন অভিভাবক ঐ বছর ৬ নভেম্বর শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানা সম্প্রতি পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, অত্র একাডেমির প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন খানের যোগসাজসে ও চতুরতার কারণে ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাহাঙ্গীর আলমকে পরিচালনা কমিটির সদস্য নিযুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। জাহাঙ্গীর আলমের কন্যা সুহা তাসমিম ২০১৮ সালে জিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অক্সফোর্ড একাডেমিতে ভর্তি না হয়ে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও ভুয়া তথ্যে জাহাঙ্গীর আলমকে সদস্য করা হয়।
এছাড়া, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ভর্তির সময় প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নির্মাণ/উন্নয়ন খাতের কথা বলে শিক্ষা বোর্ডের নিয়মবহির্ভূতভাবে ৩০০ টাকা হারে আদায় করা হয়। অভিযোগ উঠলে ইউএনও ও শিক্ষকমণ্ডলীর সভায় এ টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও প্রধান শিক্ষক তা না দিয়ে সিদ্ধান্তের রেজুলেশন ঘষামাজা করে নানা টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তিন বছর আগে অন্যায়ভাবে অব্যহতি দেওয়া এক জন শিক্ষক আদালতের নির্দেশে পুনর্বহাল হলেও তার প্রাপ্য এ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি । এ ক্ষেত্রে আদালতের আদেশ এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনাও অমান্য করে চলেছেন প্রধান শিক্ষক। অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সম্পত্তি নিজ নামে লিখিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম ফারুক জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও নতুন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, একটি মহল তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টায় এমন অভিযোগ এনেছে। নিয়মানুযায়ী বিদ্যালয় পরিচালনা ও অর্থনৈতিক কার্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে।