বাংলাদেশ সরকারকে ট্যাক্স-ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর স্কুল চালিয়ে যাচ্ছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। কূটনৈতিক প্রাধিকারের আওতায় ঢাকার গুলশান কূটনৈতিক এলাকায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলটি চলছে। কূটনৈতিক প্রাধিকার বিধান অনুযায়ী দূতাবাসগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানরা এ স্কুলে পড়াশোনা করলে এবং দূতাবাসসংশ্লিষ্টরাই শিক্ষকতা করলে স্থানীয় পদ্ধতিতে ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হয় না। কিন্তু আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলটি বাংলাদেশের স্থানীয় শিক্ষার্থীও ভর্তি করে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উচ্চহারে টিউশনসহ অন্যান্য ফি আদায় করে। আর তাই এই স্কুলটিকেও ভ্যাট-ট্রাক্সের আওতায় আসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মতো বাংলাদেশ সরকারকে তারা ভ্যাট-ট্যাক্স দেয় না। দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বছরের পর বছর ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে আসছে। দূতাবাস পরিচালিত এই স্কুলটিতে আমেরিকান শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রি-কিন্ডারগার্ডেন থেকে এ লেভেল পর্যন্ত পাঠদান করানো হয়। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের সব ক্ষুদ্র রাষ্ট্রকে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ সব বিবি-বিধান মেনে চলার পরামর্শ-উপদেশ দিয়ে বেড়ানো মার্কিনিরাই বাংলাদেশ সরকারকে ভ্যাট ফাঁকি দেয়। বিষয়টি বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। নজরে এসেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও। সম্প্রতি মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড( এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলটির ভ্যাট-ট্যাক্সের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। স্কুলটির নিবন্ধন রয়েছে কি-না তাও জানাতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সাত দিনের মধ্যে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচছুক শিক্ষা মন্ত্রণলায়ের একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির নেতা হাবিবুর রহামান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, মার্কিনিরা আমাদের উপদেশ দেয় ভ্যাট-ট্যাক্সসহ সব বিধান মেনে চলতে। সুশাসনসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান দেয় তারা অথচ তারাই আমাদের দেশের প্রচলিত বিধান মেনে চলেন না এটা খুবই দুখ:জনক।