মডেল শিক্ষক : গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের বিরোধিতায় শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে 'মডেল শিক্ষক' নির্বাচনকে ভালোভাবে দেখছেন না প্রাথমিক শিক্ষকরা। তারা বলছেন, মডেল শিক্ষক হওয়ার জন্য লবিং এমনকি ঘুষ লেনদেন শুরু হবে। নতুন এক গজব হিসেবে দেখা দেবে মডেল শিক্ষকের ধারণা। 

জানা যায়, গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মডেল শিক্ষকদের দিয়ে সংশ্নিষ্ট উপজেলার অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া বিদ্যালয়গুলোর দুর্বল শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হবে। বিশেষ করে নজর দেওয়া হবে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের ওপরে। এ সিদ্ধান্তের ফলে উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে সরকার।

এ ছাড়া গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা কাটাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ জন্য দুই হাজার মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হচ্ছে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে এটি করা হবে। এ জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চুক্তি সই হয়েছে। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য উপজেলা পর্যায়ে ফলের দিক দিয়ে সেরা স্কুলগুলোর শিক্ষকদের মধ্য থেকে নির্বাচন করা হবে 'মডেল শিক্ষক'। এই মডেল শিক্ষকদের দিয়ে ওই উপজেলার যেসব বিদ্যালয়ের ফল ভালো নয়, সেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য সুপারিশ করেছে এই মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়কে তাগাদাও দেওয়া হয় বৈঠক থেকে। 

এরপর মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়টি নিয়ে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) খান মোহাম্মদ নুরুল আমিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি চাইলেও 'মডেল শিক্ষক' নিয়োগ করার বিষয়ে 'ধীরে চলো নীতি' অনুসরণ করছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অনেকে মনে করেন, এতে ভালো স্কুলগুলোর ক্ষতি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির নেতা হাবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, মডেল প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগটি ভালো। তবে সঠিক মানদ নির্ধারণ না করে মডেল শিক্ষক নিয়োগ দিলে তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

ঝালকাঠীর রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিরীন সুলতানা বলেন, মডেল প্রাথমিক শিক্ষক তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার খুব একটা প্রয়োজন আদৌ আছে বলে আমি মনে করি না। বরং অগ্রগামী বিদ্যালয়গুলোতে অনগ্রসর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পালাক্রমে ডেপুটেশন দিলে বাস্তবে তা অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে। তারা অন্তত তিন মাস অগ্রগামী বিদ্যালয়ে কাজ করলে হাতেকলমে অনেক কাজ শিখতে পারবেন এবং নিজের বিদ্যালয়ে তা প্রয়োগ করতে পারবেন। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মডেল স্কুলের সব ভালো শিক্ষককে ক্লাস করাতে অন্যত্র নিয়ে গেলে সেইসব স্কুল চলবে কী করে? তাই আপাতত আমরা মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের বলেছি, উপজেলার ভালো স্কুলগুলো ভিজিট করে তাদের 'গুড প্র্যাকটিস'গুলো নিয়ে দুর্বল স্কুলগুলোতে কাজে লাগাতে। আর মডেল শিক্ষক না হলেও 'শ্রেষ্ঠ শিক্ষক' নির্বাচনের প্রক্রিয়া বর্তমানে চালু আছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার - dainik shiksha ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার - dainik shiksha ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার অবন্তিকার আত্মহত্যা: সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস জবি উপাচার্যের - dainik shiksha অবন্তিকার আত্মহত্যা: সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস জবি উপাচার্যের হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের - dainik shiksha হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মিলছে না মূল্যায়ন - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মিলছে না মূল্যায়ন মূল্যায়ন বুঝলেও নৈপুণ্য অ্যাপে চ্যালেঞ্জের মুখে শিক্ষকরা - dainik shiksha মূল্যায়ন বুঝলেও নৈপুণ্য অ্যাপে চ্যালেঞ্জের মুখে শিক্ষকরা ‘পড়তে ও লিখতে’ শেখা প্রকল্প কেনো - dainik shiksha ‘পড়তে ও লিখতে’ শেখা প্রকল্প কেনো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041289329528809