মণিরামপুরে অর্ধশত প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ

মণিরামপুর প্রতিনিধি |

যশোরের মণিরামপুরে অন্তত অর্ধশত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করানো হচ্ছে। তা ছাড়া প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠানে কোনো ভবনই নেই। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তারা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান দাবি করেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৩৩টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এসব জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। কোথাও অভিভাবকদের চাপের মুখে বাধ্য হয়ে বিদ্যালয় চত্বরে অস্থায়ী খুপরিঘরে, কোথাওবা শামিয়ানা (বড় চাদর) টানিয়ে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

উপজেলার পাড়িয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা স্কুলের মূল ভবন ছেড়ে অস্থায়ীভাবে তৈরি একটি খুপরিঘরে ক্লাস করছে। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ হয়ে আছে। কয়েক মাস আগে ছাদ খসে খসে পড়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তা ছাড়া অভিভাবকরাও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস নিতে বাধা দিচ্ছেন। তাই এখানে খুপরিঘরে ক্লাস নিচ্ছি।’ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্ধেন্দু কুমার দাস বলেন, ‘১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণ করা হয়। অল্প দিনেই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন জানিয়েছি।’

একইরকম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে উপজেলার শৈলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝাঁপা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মথুরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জালঝাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মণিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া উপজেলার কমপক্ষে ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো ভবনই নেই। ফলে ওই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানবেতর পরিবেশের মধ্য দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম সম্পন্ন করছে।

সরেজমিনে উপজেলার নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির অবস্থা খুবই শোচনীয়। সেটি যে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা দেখে বোঝানোর উপায় নেই।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লিতুনজিরা খাতুন জানায়, বৃষ্টির সময় স্কুলঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে, আর গরমের সময় ঘরের  মধ্যে গরমে থাকতে পারে না তারা। তাই স্যার-আপারা গাছতলায় ক্লাস নেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদল মণ্ডল বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছি।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. মনিরা খাতুন বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনগুলোর তালিকা করে উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এসব ভবন সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হবে। তা ছাড়া যেসব বিদ্যালয়ে ভবন নেই তার তালিকাও যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে।’

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028069019317627