মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে জালিয়াতি

আকতারুজ্জামান |

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাখায় ভর্তিচ্ছুদের খাতা জালিয়াতি করে নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। তদন্তে দেখা গেছে, ভর্তির জন্য পরীক্ষায় অনেক ছাত্র-ছাত্রীর উত্তরপত্র ঘষা-মাজাসহ খাতায় অন্য কেউ লিখে দিয়েছে প্রশ্নের উত্তর। স্কুলটিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছুদের ৬৯টি উত্তরপত্রে এমন অসামঞ্জস্য রয়েছে।

বিক্ষুব্ধ এক অভিভাবক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিলে তদন্তে নামে ঢাকা জেলা প্রশাসন। তদন্তে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির বিষয়টির সত্যতা মিলেছে। ভর্তি পরীক্ষার খাতায় নম্বর জালিয়াতির ক্ষেত্রে কমপক্ষে তিন কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তথ্য মতে, অভিভাবক শ্যামলী শিমু অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন খাতায় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম ও সহকারী প্রধান শিক্ষক আ. ছালাম খান, অফিস সহকারী দীপা, কবির, আতিক মিলে ভর্তিচ্ছুদের খাতাগুলোর ওপর (ঘষামাজা নির্যাতন) করেন। অধ্যক্ষ ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিজ হাতে শিক্ষার্থীদের খাতায় লিখে দেওয়ার অভিযোগ আনেন তিনি।

আরও অভিযোগ করেন, ভর্তিচ্ছুদের ভুল উত্তর রাবার দিয়ে মুছে শুদ্ধ উত্তর লিখে দিয়েছেন এই শিক্ষকরা। ঢাকা জেলা প্রশাসনের তদন্তকারী কর্মকর্তা তাসলিমা মোস্তারি প্রতিবেদনে বলেন, আইডিয়াল স্কুলের মতিঝিল, মুগদা, বনশ্রী শাখার মোট ৬৯টি খাতায় ঘষামাজা ও ওভার রাইটিংয়ের প্রমাণ মিলেছে। পরে সে খাতাগুলো জব্দ করা হয়েছে। কিছু কিছু খাতার উত্তর রাবার দিয়ে মুছে সেখানে ওভাররাইটিং করা হয়েছে। তবে খাতা ঘষামাজা ও ওভাররাইটিং করে ভর্তিতে জালিয়াতির প্রমাণ মিললেও তদন্ত প্রতিবেদনে কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। এমন কি প্রতিবেদনে বলা হয়, অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম, সহকারী প্রধান শিক্ষক আ. ছালাম খান, অফিস সহকারী দীপাসহ অন্যদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্পষ্ট করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযোগকারী শ্যামলী শিমুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভর্তি জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত এই আইডিয়াল স্কুল। জড়িতদের শনাক্ত করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান তিনি।

তদন্ত কর্মকর্তা তাসলিমা মোস্তারি এ প্রতিবেদককে বলেন, তদন্তে উত্তরপত্রে হাতে লিখে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

ভর্তি পরীক্ষার খাতায় জালিয়াতির ব্যাপারে জানতে চাইলে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মতিঝিলের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

 

সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028259754180908