মনে হয় না বই পড়ার আগ্রহ বাড়ছে: মুহম্মদ জাফর ইকবাল

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

গতকাল শুক্রবার বইমেলায় আসেন লেখক-শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অমর একুশে বইমেলা, পাঠ্যাভ্যাস, তরুণদের সাম্প্রতিক প্রবণতাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন ।

প্রশ্ন: এবারের মেলায় কাকলী থেকে ‘অবিশ্বাস্য সুন্দর পৃথিবী’ নামে আপনার একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে আপনার ওপরে জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এরকম হামলার পরেও আপনি খুব স্বাভাবিকভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনার ভয় লাগে না?

মুহম্মদ জাফর ইকবাল: আমার কোন ভয় নাই। কোন ক্ষ্যাপা মানুষ কিছু করবে সেটা নিয়ে ভয়ে কুঁকড়ে থাকতে হবে কেন! এই ক্ষ্যাপা মানষের সংখ্যা খুব কম।

প্রশ্ন: তাহলে তরুণদের নিয়ে আপনার কোন দুশ্চিন্তা নেই বলছেন?

মুহম্মদ জাফর ইকবাল: জঙ্গি নিয়ে চিন্তিত নই। তরুণরা জঙ্গি হয়ে যাচ্ছে এটা নিয়েও ভয় পাওয়ার কিছু আছে বলে মনে করি না। খুবই অল্প কিছু তরুণ বিপথগামী হচ্ছে। বিশাল যে তরুণ সমাজ তারা কিন্তু ঠিক পথেই রয়েছে। আমি চিন্তিত আমাদের তরুণরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। ফেসবুকে আসক্ত হচ্ছে। এটা যদি না হতো তাহলে তারা আরো বেশি বেশি বই পড়তে পারত।

প্রশ্ন: কিশোর-তরুণদের উদ্দেশে কিছু বলবেন।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল: তাদে বলবো, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। এই ফেসবুকসহ যেসব সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে এটা আমাদের সময়কে নষ্ট করছে। ভার্চুয়াল ফ্রেন্ড জীবনে কোন মানে রাখে না। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাও। পরামর্শ একটাই, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকো।

প্রশ্ন: বলা হচ্ছে, বই বিক্রি দিন দিন বাড়ছে।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল: আমার তা সত্যি বলে মনে হয় না। বই পড়ার আগ্রহ বেড়েছে কীভাবে বলি। তাই যদি হত তাহলে এই ১৬ কোটি মানুষের দেশে প্রকাশকরা একটা ভালো বই পাঁচ লাখ ছাপাতেন। কিন্তু প্রকাশকরা এক হাজার বই ছাপালেই খুশি। আমার মনে হয় না বই পড়া বাড়ছে। মেলায় যখন আসি তখন অনেকে সেলফি তুলতে আসে, স্বাক্ষর নিতে আসে কিন্তু তাদের হাতে বই দেখি না। তখন মনটা খারাপ হয়। তবে বই বিক্রি না হওয়াটা সারা পৃথিবীর সমস্যা। বইকে এখন লড়াই করতে হচ্ছে টিভি স্ক্রিপ্টের সঙ্গে। অথচ আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের কাছে বিনোদন বলতে বই ছাড়া আর কিছু ছিল না। এখন তো কত কিছু শিশুদের হাতে!

প্রশ্ন: বইমেলার কলেবর বাড়ছে। কেমন লাগছে বইমেলা?

মুহম্মদ জাফর ইকবাল: আমার তো মেলা ঘুরে দেখাই হয় না। মেলায় ঢুকলেই সবাই ঘিরে ধরে। সবার সঙ্গে সেলফি তুলতে হয়, বইয়ে স্বাক্ষর দিতে হয়। বইমেলা ঘুরে দেখা, বই দেখার সুযোগ খুব একটা হয় না। তারপরও মেলার কলেবর বাড়ছে। সুন্দর হচ্ছে বুঝতে পারি।

প্রশ্ন: নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এলেও মেলায় বিশাল ভিড় জমে যেত। আপনি এলেও তাই হয়। আপনার ছোট ভাই আহসান হাবীব, আপনাদের পরিবারের গুলিতেকিন খান লিখছেন, তাদের বইও বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। এর রহস্য কী?

মুহম্মদ জাফর ইকবাল: সবাই চিরায়ত সাহিত্য রচনা করতে চায়। আমরা সহজ ভাষায় মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দের কথা লিখি। চিরায়ত সাহিত্য রচনার দিকে আমাদের মন নেই। আমার ধারণা, সে কারণেই আমাদের লেখা মানুষ পড়ে। আর কোন রহস্য নেই।

 

সূত্র: ইত্তেফাক


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002655029296875