মহিলা কলেজের ভর্তির চূড়ান্ত তালিকায় ৬ পুরুষ শিক্ষার্থী

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আজগুবি আর তুঘলকি কান্ডে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুড়ি মেলা ভার। এবার টাঙ্গাইলের সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তির চূড়ান্ত তালিকায় ছয় ছেলে শিক্ষার্থীর নাম দেখানো হয়েছে। ২ জানুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই ছয় ছেলে শিক্ষার্থীর দাবি, তাঁরা যথাযথ নিয়ম মেনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ফরম পূরণ করেছেন। সোমবার (৬ জানুয়ারি) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান এস এম জাকির হোসাইন জানান, ওই ছয় ছেলে শিক্ষার্থীর কোনোভাবেই মহিলা কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেই। এমনকি তাঁরা এবার অন্য কলেজেও ভর্তির সুযোগ পাবেন না। ভর্তির জন্য আগামী বছরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোয় স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়ার জন্য গত ১১ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সময় বেঁধে দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ওই ছয় শিক্ষার্থী সরকারি সাদত কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার জন্য অনলাইনে ফরম পূরণ করে। মেধার ভিত্তিতে সরকারি সাদত কলেজের কোটা পূরণ হওয়ায় তাঁরা ওই কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়নি। এদিকে সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের ৫০ আসনের বিপরীতে মাত্র নয়জন মেয়ে শিক্ষার্থী প্রথম দফায় ভর্তি হন। আরও ৪১ আসন শূন্য থাকে। দ্বিতীয় দফায় শূন্য আসন পূরণের লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গত ১৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিলিজ স্লিপে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয়। তখন প্রথমবার ভর্তির সুযোগ না পাওয়া ওই ছয় ছেলে শিক্ষার্থী রিলিজ স্লিপে ভর্তি হওয়ার জন্য সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজসহ আরও দুটি কলেজকে চয়েজ (পছন্দ) দিয়ে অনলাইনে ফরম পূরণ করেন। ২ জানুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজে শূন্য ৪১ আসনে ৪১ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য যোগ্য বলে দেখানো হয়। এই তালিকায় ছয়জন ছেলের নাম দেখে হতবাক হয়ে যান মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকেরা।

ওই ছয় ছেলে শিক্ষার্থী হলেন আবদুল আলীম, মো. সজল হোসেন, ফরহাদ আলম, মো. রাসেল হোসাইন, মো. হৃদয় খান ও সেলিম মাহমুদ।

সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রমজান আলী জানান, ‘ভর্তির চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকা কয়েকজন ছেলে শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে ভর্তি হওয়ার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। পরে তাঁরা ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেয়ে লজ্জা পেয়ে চলে যান।’

মো. রাসেল হোসাইন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ত্রুটির কারণে আমরা এক বছর পিছিয়ে যাচ্ছি। কারণ, অনলাইনে আবেদনের সময় মহিলা কলেজের নামে ক্লিক করার পর আমাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে ওই ধরনের ব্যবস্থা থাকলে আমাদের আবেদন গ্রহণ হতো না। ফলে আমরা হয়তো অন্য কলেজে ভর্তি হতে পারতাম। ওই ছয় শিক্ষার্থী দ্বিতীয়বার রিলিজের মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।’

এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরের মাস্টার্স শ্রেণির ভর্তির নিবন্ধন কমিটির সচিব, সহযোগী অধ্যাপক আলী জাফর চৌধুরী সোমবার বলেন, ওই ছয় শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদনে ভুল করেছেন। তাঁরা মহিলা কলেজ চয়েজ দিয়েছেন। হয়তো তাঁরা বুঝতে পারেনি। এখনো দ্বিতীয় রিলিজ স্লিপে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত না হলে ওই ছয় শিক্ষার্থীকে আরও এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032508373260498