‘আমি নাকি দেখতে তাঁর মেয়ের মতো। নিজের মেয়েকে ৫০০ টাকা দিলে আমাকে নাকি দেবেন এক হাজার টাকা। কিন্তু নিজের অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে স্যার আমার শরীরে হাত দিয়েছেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার দুর্গাপুরের আন-নূর ইসলামিয়া মহিলা মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক শওকত হোসেন রিপনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছে এক শিক্ষার্থী। শওকত হোসেন ওই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকও।
নিপীড়নের শিকার আরেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ‘স্যার আমাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যান। যাওয়া-আসার পথে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেন। এরপর বলেন, কাউকে কিছু বললে মাদরাসা থেকে বের করে দেওয়া হবে।’
এই দুই ছাত্রীর একজন বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। স্থানীয়রা বলছে, শওকত হোসেন রিপনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির এরকম আরো অভিযোগ আছে। সর্বশেষ ঘটনার পরই পালিয়েছে শওকত হোসেন রিপনসহ মাদরাসার মালিক কর্তৃপক্ষ।
এলাকাবাসী জানায়, ওই শিক্ষকের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী মাদরাসা ছেড়েছে। তবে লজ্জায় তারা মুখ খুলছে না। নিপীড়নের শিকার আরো অনেকে মাদরাসাতেই লেখাপড়া করছে। গিয়াস উদ্দিন নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমরা ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই শিক্ষকসহ মাদরাসার মালিকপক্ষের লোকজন পালিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় এসে ঘুরে গেছে।’
সংরক্ষিত আসনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নার্গিস আক্তার বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। আরো অনেক শিক্ষার্থী নাকি ওই শিক্ষকের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে।’
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সানজিদা আক্তার বলেন, ‘মেয়েটির সারা শরীরে ব্যথা করছে বলে জানিয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুল আমিন বলেন, ‘এলাকায় গিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিভিন্ন সময়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে।’