সাভারে সাব্বির (৮) নামে এক শিক্ষার্থীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুই মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা রফিকুল ইসলাম সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
শনিবার (১৮ আগস্ট) সকালে সাভার পৌর এলাকার বক্তারপুর মহল্লার বক্তারপুর দারুল উলুম হাকিমিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় এ মারধরের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলে মাদরাসা কমিটির সহায়তায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষক পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাব্বির বলেন, মাদরাসার মোয়াজ্জিন হুজুর আব্দুল আউয়াল ও মক্তবের হুজুর আশরাফ আলী আমাদের দিয়ে তাদের শরীর হাত-পা টেপায়। শনিবার সকালে আমাকে তাদের জুতা পরিষ্কার করে দিতে বলে। আমি পরে করে দেবো বললে তারা আমাকে মারধর করেন। এ সময় শিক্ষক আব্দুল আউয়াল আমার বুকের উপর পা দিয়ে চাপ দিয়ে দুই হাত উচু করে ধরে এবং আশরাফ আলী আমার মুখে সাদা কাপড় পেঁচিয়ে জোড়া বেত দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
ওই শিক্ষার্থীর মা রূপালী আক্তার বলেন, আমার ছেলেকে মাঝেমধ্যেই মারধর করে মাদরাসার শিক্ষকরা। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) ও গতবছরও মারধর করেছে। বিষয়টি জিজ্ঞাসা করার জন্য আমার মামা ওই মাদরাসায় গেলে গফুর মিয়া তাকে বকাঝকা করে তাড়িয়ে দেয় এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
বিষয়টি জানতে মাদরাসায় গেলে কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক রমজান মোক্তারসহ তাদের লোকজন সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন। এ সময় তারা বলে আমাদের মাদরাসার বিষয় আমরা বুঝবো, আপনাদের এখানে কে ডেকেছে। আপনারা বের হয়ে যান নইলে কিন্তু অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।
এ সময় উপস্থিত মো. কামাল নামে একজন বাবা অভিযোগ করেন, এখানে আমার ছেলেকে পড়াতাম। কিন্তু মাদরাসার শিক্ষকরা ছাত্রদের অনেক মারধর করে তাই অন্য জায়গায় নিয়ে গেছি। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে তখন অনেকেই অভিযোগ করতে থাকে মাদরাসাটির বিরুদ্ধে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রের বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।