ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার আজগর আলী দাখিল মাদরাসার সুপার মো. আবদুর রহমান সরকার মানিকের বিরুদ্ধে পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার বিকালে দুদক টিম আটককৃত সুপারকে নিয়ে মাদরাসায় গেলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়। ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ওই সুপারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক লেনদেনের অভিযোগসহ ছয়টি মামলা হয়েছে।
গত সোমবার উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ উল আলমের কাছে সুপারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা ওই মাদরাসায় গেলে একপর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নিজেই ১০৬ নম্বরে কল করে সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি দুদককে অবহিত করেন। তারই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুদকের কুমিল্লা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. শফিকুল ইসলাম ও মো.সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম মাদরাসায় যায়। এ সময় ক্ষুব্ধ জনতা মাদরাসা মাঠে সুপারের বিচার দাবিতে মিছিল করে। তদন্ত টিম কমিটিবিহীন প্রতিষ্ঠান চালানো, সভাপতির সই জাল করে টাকা উত্তোলন, নারী কেলেঙ্কারিসহ মাদ্রাসার ৫০টি গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের সত্যতা খুঁজে পায়। এসময় যাবতীয় কাগজপত্র জব্দ করে নিয়ে আসে তদন্ত টিম।
উল্লেখ্য, মাদরাসা সুপার আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ছয়টি মামলা রুজু করেছেন অভিভাবক এবং মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। মামলার বাদীরা হলেন; কুটি ইউনিয়নের রানিয়ারা গ্রামের অভিভাবক বাবুল মিয়া, সাবেক শিক্ষার্থী মো. হাসান মিয়া ও মো. ওমর ফারুক এবং সহকারী সুপার মো. শাহজাহান মিয়া। এছাড়া একই গ্রামের জনৈক অভিভাবক তার মেয়ের শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে ওই সুপারের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছেন। এছাড়া গত সোমবার মাদরাসা সুপার আবদুর রহমান মানিকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে অভিভাবক এবং এলাকাবাসী। ঐ দিন বিকালে মাদরাসা অফিস কক্ষে এলাকাবাসী সুপারকে অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন, সুপারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী এই মাদরাসার পরিচালনা কমিটি গঠন করা হবে।
কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ লোকমান হোসেন জানান; অভিযুক্ত সুপার আবদুর রহমান মানিকের বিরুদ্ধে ঐ এলাকার অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও মাদরাসার শিক্ষক ছয়টি মামলা করেছেন। তবে পাঁচটি মামলা রেকর্ড করে আমরা দুদকের কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।