মাদরাসাছাত্রের শরীরজুড়ে শিক্ষকের আঘাতের চিহ্ন

গাজীপুর প্রতিনিধি |

চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। শরীরজুড়েই আঘাতের চিহ্ন। মাঝেমধ্যেই ব্যথায় কেঁপে উঠছে ৮ বছরের মাকসুদুল হাসান। পড়া না শেখার কারণে গত ১৫ দিন ধরে নিয়ম করে দিনে দুইবার তাকে মারধর করেছেন মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা শরীফুল ইসলাম। এ ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটী গ্রামের আবদুস ছাত্তার হাফিজিয়া মাদরাসায়। এমন নির্যাতনের ঘটনায় গতকাল শুক্রবার অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মাকসুদুলের পরিবার। যদিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষক শরীফুল। তার দাবি, মাকসুদুল আরেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে মারামারি করেছে।

জানা যায়, পৌরসভার মাধখলা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের একমাত্র ছেলে মাকসুদুল ভাংনাহাটীর আবদুস ছাত্তার হাফিজিয়া মাদরাসায় নাজেরা বিভাগের ছাত্র। পড়াশোনায় একটু অমনোযোগী হওয়ার কারণে নিয়মিত পাঠ শেষ করে উঠতে পারত না সে। এ কারণে গত ২৭ জুলাই রাতে অন্যসব শিক্ষার্থী ঘুমিয়ে পড়লে মাকসুদুলকে বারান্দায় নিয়ে বেদম পেটান শিক্ষক শরীফুল। ঘটনার একদিন পর মাকসুদুলকে তার মা কুলসুম আক্তার দেখার জন্য মাদরাসায় যান। এ সময় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন দেখে ছেলের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। 

কুলসুম আক্তার জানান, তখন তিনি ওই শিক্ষকের কাছে গিয়ে অনুরোধ করেন যেন তার ছেলেকে এভাবে মারধর না করা হয়। এতে ওই শিক্ষক ক্ষেপে যান। এরপর থেকে প্রতিদিন দুইবার মাকসুদুলকে মারধর করতে থাকেন শিক্ষক শরীফুল।

এভাবে গত ১৫ দিনে দুইবার করে মারধর করা হয়েছে মাকসুদুলকে।

বৃহস্পতিবার ঈদের ছুটিতে মাকসুদুল বাড়িতে যাওয়ার পর পরিবারের কাছে পুরো বিষয়টি জানায়। মাকসুদুল জানায়, মাদরাসার বারান্দায় নিয়ে রাত ১১টায় ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও সকাল ১১টায় বিরতির সময় তাকে একাধারে ১৫ দিন পেটানো হয়েছে। আঘাত করার সময় চোখ দিয়ে পানি বের হলে এবং কোনো শব্দ করলে ওই শিক্ষক আরও বেশি মারধর করতেন। 

নাতির ওপর নির্যাতনের ঘটনায় মাকসুদুলের দাদা আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার শিক্ষক শরীফুল ইসলামকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। শিক্ষক শরীফুল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার হাসানহাট গ্রামের আবদুর রহীমের ছেলে।

তবে তার দাবি, মাকসুদুলকে তিনি পেটাননি। সে আল আমীন নামে এক সহপাঠীর সঙ্গে মারামারি করেছে। বিষয়টি জানার পর শিক্ষকরা আল আমীনকে মাদরাসা থেকে বহিষ্কারও করেছে।

এ ব্যাপারে ওই মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা বেলায়েত হোসেন বলেন, মাকসুদুলকে কোনো শিক্ষক পেটাননি। দুই সহপাঠীর মধ্যে মারামারি হয়েছিল।

শ্রীপুর থানার ওসি মো. লিয়াকত আলী বলেন, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে পুলিশ খুঁজছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029230117797852