হাত হারানো ফিরোজ সরদারের আগামীকালের (৩০জুন) মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে । শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে রাজশাহী ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় কুনই থেকে তার ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বর্তমানে সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ফিরোজ বগুড়ার নন্দিগ্রামের মাহফুজুর রহমানের ছেলে ও রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মুহা. হবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘ফিরোজের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সে অনেকটাই অসুস্থ। আইসিইউ এর পোস্ট অপারেটিভ রুমে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালে পরীক্ষা দেওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। সে যদি জেলখানায় থাকতো তাহলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পরতো। এছাড়া ফিরোজ চাইলে তাকে সূতি লেখক দেওয়া হবে। এসময় কলেজের পক্ষ থেকে ফিরোজের চিকিৎসায় সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন কলেজ অধ্যক্ষ।
ফিরোজের বাবা দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, কাল তার মাস্টার্স পরীক্ষা। এর আগে কয়েকটা হয়েছে। সে ডান হাতে লিখত। বুঝতে পারছি না কি করবো। ফিরোজের সঙ্গে কথা বলেই পরীক্ষার বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে জানানো হবে। যদি ফিরোজ পরীক্ষা দিতে পারবে বলে, তাহলে অধ্যক্ষেকে জানিয়ে সুযোগ থাকলে পরীক্ষা দেয়ার চেষ্টা করবো।
বাসে সহপাঠী বীরেশ্বর চন্দ্র প্রামাণিক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দিতে তারা একই বাসে বগুড়া থেকে রাজশাহীগামী বাসে উঠেছেন। পথে রাজশাহী শহরের উপকণ্ঠে থাকা কাটাখালী পৌর এলাকায় এসে বাসটি খুবই বেপরোয়া চলছিল। হঠাৎ একটা গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। একটা বিকট শব্দ শুনতে পান। এর পর পরই সবাই চিৎকার শুরু করেন- হাত পড়ে গেছে। কিন্তু কার হাত, তা তিনি তখন বুঝতে পারেননি। বাসটি রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী থামলে দেখেন তার বন্ধু ফিরোজকেই নামানো হচ্ছে। তার ডান হাত বাহু থেকে পড়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে অহত ফিরোজকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কলেজ ছাত্র ফিরোজের কনুই থেকে হাত বিচ্ছিন্ন হওয়া ঘটনায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে বলে কাটাখারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন নিশ্চিত করেছন।