বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন প্রশ্নে জারিকৃত রুলের ওপর হাইকোর্টে চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রায়ের জন্য দিন ধার্য রেখেছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল বুধবার শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করে দেয়। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রায় ঘোষণার পরই জানা যাবে, মিন্নি জামিন পেয়েছেন কি না।
গত ২০ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে কেন জামিন দেয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারি করে। পাশাপাশি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে কেস ডকেটসহ (সিডি) আদালতে তলব করে। পাশাপাশি আদালতে জবানবন্দি দেয়ার আগে মিন্নি দোষ স্বীকার করেছেন মর্মে বরগুনার এসপির সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা চায় আদালত। আদালতের নির্দেশে বক্তব্যের লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন এসপি।
জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, রিফাত হত্যাকাণ্ডের আগে আট বার এবং পরে পাঁচ বার নয়ন বন্ডের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মিন্নি। এটা কি তাকে নির্দোষ প্রমাণ করে? সে এই ঘটনার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী। তার কারণেই দুটো প্রাণ ঝরে গেছে।
জবাবে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, বন্ড মারা যাওয়ার আগে পুলিশের সঙ্গে ৭৭ বার টেলিফোনে কথা বলেছে। এ রিপোর্ট পত্রিকায় এসেছে। সেইসব কল লিস্ট কোথায়? আর যে নয়ন বন্ডের কথা বলা হচ্ছে, সেই বন্ড তৈরি হয়েছে পুলিশ ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। পুলিশ এখন বলছে বন্ড মিন্নির সৃষ্টি।
এ পর্যায়ে আদালতে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, বিচারের আগে পর্যন্ত আদালত মিন্নিকে জামিন দিতে পারে। জামিনের সঙ্গে তদন্তের কোনো সম্পর্ক নেই। আসামি যদি তদন্তকে প্রভাবিত না করে এবং আদালত যদি মনে করে জামিন দেয়াটা যুক্তিযুক্ত, তাহলে সেই ক্ষমতা কোর্টের রয়েছে।
এর আগে তলব আদেশে হাইকোর্টে সিডিসহ হাজির হন তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। আদালতের জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি বলেন, ‘মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। হাইকোর্টের তলব আদেশ থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারিনি।’
আদালত বলে, ‘আমাদের তলব আদেশের সঙ্গে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল না করার সম্পর্ক কী?’ মামলার সিডি পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলে, ‘সিডিতে যা রয়েছে তার সঙ্গে এসপির সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের কোনো মিল পাচ্ছি না। যত বড় পদে আসীন তাকে তত সতর্ক থাকতে হয়।’