ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেছেন, ‘১৫ ও ২১ আগস্টের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে যারা ‘নিছক দুর্ঘটনা’ মনে করেন তাদের অধীনেই চাকরি করতে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কর্মকর্তাদের, এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কিছু হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন জামায়ত তথা স্বাধীনতা বিরোধীরা, তারা চিহ্নিত। কিন্তু স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে বারবার পরীক্ষা দিতে হয়, প্রমাণ করতে হয় তারা জাতির পিতার সৈনিক।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদের ১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকলে এ কথা বলেন তিনি।
অধ্যক্ষ নেহাল আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের এই সংগঠনটি যখন গত বছর এই দিনে গঠিত হয়, তখন অনেকেই ভয়ে লেজ গুটিয়ে ছিলেন। একাদশ নির্বাচনের আগে অনেকেই যখন বর্ণচোরার ভূমিকায় তখন মুজিবের সৈনিকেরা রিস্ক নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষা প্রশাসনে টিকে থাকতে এখনও তাদেরকেই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীরা বহাল তবিয়তে তো রয়েছেই বরং ভোল পাল্টে আরও নতুন নতুন পদে আসীন হচ্ছে, যা দুর্ভাগ্যজনক বৈ অন্য কিছু নয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. গোলাম ফারুক বলেন, যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ক্যাডারদের সবাই আমাকে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেছেন এবং আমি সেটাই করছি। বৈধ নেতৃত্বের হাতে থাকতে হবে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।
স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদের সদস্য-সচিব সৈয়দ জাফর আলী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমাদের আশ্রয়স্থল বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কোনও কমিটি এখন আর নেই। মহাপরিচালকের নেতৃত্বে সাধারণ সভার মাধ্যমে নির্বাচিত বৈধ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সিনিয়ররা তা আমরা স্বাগত জানিয়েছি এবং প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছি।’
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবীনা মীরা। স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদের সংসদের সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, সাবেক সভাপতি আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, সাবেক মহাসচিব মো. মাসুমে রাব্বানী খান ও অলিউল্লাহ মো. আজমতগীরসহ সিনিয়র নেতারা বক্তৃতা করেন।
অুনষ্ঠানে শিক্ষা ক্যাডারের শতশত সিনিয়র-জুনিয়র কর্মকর্তা অংশ নেন। শিক্ষা প্রশাসন থেকে বাড়ৈ সিন্ডিকেট হটানোর শপথ নেন তারা।
উল্লেখ্য, গত দশ বছর শিক্ষা প্রশাসনকে তছনছ করে, লুটেপুটে খেয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গোপনে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক এপিএস মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ। শিক্ষা প্রশাসনে এখন নতুন চেহারায় বাড়ৈ সিন্ডিকেট সদস্যরাই পদায়ন পাচ্ছেন। এই সিন্ডিকেটে প্রশ্নফাঁস, স্ত্রী হন্তারক, বউ পেটানো, স্বাধীনতাবিরোধী ও সুবিধাবাদী শক্তির আধিক্য।