সম্প্রতি বিটিআরসি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশনের মাত্রা নিয়ে জরিপ করেছে তাতে মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি। টাওয়ারের রেডিয়েশন আন্তর্জাতিক ও বিটিআরসির বেঁধে দেয়া মানদণ্ডের অনেক নিচে আছে, তাই তা নিয়ে আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর এক হোটেলে মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশনের মানদণ্ড ও সাম্প্রতিক জরিপ শীর্ষক আলোচনায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-এর স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার আমিনুল হাসান এসব কথা বলেন।
বিটিআরসি কমিশনার বলেন, আমরা দেশের অনেকগুলো স্থানে মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন জরিপ সম্পন্ন করেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। আপনারা জানেন যে টাওয়ারের রেডিয়েশনের ফল অত্যন্ত সন্তোষজনক পাওয়া গেছে যা আমরা নিয়মিতভাবে বিটিআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করি। আপনি যদি ভবিষ্যতে আরও উন্নততর সেবা পেতে চান তাহলে আরও বেশি মোবাইল সাইট স্থাপনের বিকল্প নেই। টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে নানা রকম বিভ্রান্তি আছে, এটা ভিত্তিহীন। আমরা সরকারি, বেসরকারি সংস্থা বা ভবন মালিকদের কাছে নিশ্চিত করছি যে আপনারা ভয় পাবেন না।
দেশের উচ্চ আদালত আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছেন। আমরা খুব দ্রুতই আদালতের কাছে রিপোর্ট পেশ করবো,” বলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন্স বিভাগের উপপরিচালক ড. শামসুজ্জোহা বলেন, রেডিয়েশন দুই প্রকার – আয়োনাইজিং এবং নন-আয়োনাইজিং। এর মধ্যে আয়োনাইজিং রেডিয়েশন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর যেমন পারমাণবিক বর্জ্য, সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রে, গামা-রে কিংবা এক্স-রে। এরা শরীরের মধ্যে ডিএনএ পর্যায়ে পরিবর্তন আনতে সক্ষম। অপরদিকে মোবাইল রেডিয়েশন নন-আয়োনাইজিং। এর শক্তি খুব কম, ফলে এর কোন স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। মোবাইল টাওয়ারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ইএমএফ রেডিয়েশন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নির্দিষ্ট মানদণ্ড আছে এবং আমরা জরিপে পেয়েছি যে দেশের মোবাইল টাওয়ারগুলোর রেডিয়েশন নির্ধারিত সীমার অনেক নিচে আছে। আমরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সুন্দরবন, ফেনী, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, জামালপুর ইত্যাদি অনেক এলাকায় জরিপ চালিয়েছি এবং এ পর্যন্ত কোথাও নির্ধারিত সীমার বেশি রেডিয়েশন পাইনি।
বিটিআরসির উদ্যোগে ও এমটবের আয়োজনে এই আলোচনায় আরও অংশ নেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম শহিদুল আলম, বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের উপপরিচালক ড. শামসুজ্জোহা এবং হুয়াওয়ে টেকনলজিস (বাংলাদেশ)-এর মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক এস এম নাজমুল হাসান। এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অব.)-এর সঞ্চালনায় এ আলোচনায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও মোবাইল শিল্প খাতের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।