যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ সিদ্ধান্ত নেন।
সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রাপ্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর দে শুভ এবং ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমে আজম শুভ।
জানা যায়, ওই দুই শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থান করতেও পারবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদ দেওয়ায় পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি (এনএফটি) বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বানী ও পিইএসএস বিভাগের আসিফ আল মাহমুদকে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করা হয়েছে। তাদের এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য পেশ করা হবে।
উপাচার্য বরাবর দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৩ অক্টোবর ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্র অন্তর দে শুভ পরীক্ষা দেওয়ার শর্ত পূরণ না করায় নিজে পরীক্ষা দিতে পারেনি বিধায় তার অন্য সহপাঠীদেরও পরীক্ষা দিতে বাধা দেয়। পরীক্ষা শুরুর আগে অন্তর দে শুভ, ইসমে আজম শুভ, আসিফ আল মাহমুদ ও গোলাম রব্বানী পিইএসএস বিভাগের অফিস কক্ষে এসে কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ ও উগ্র আচরণ করেন। এসময় তারা উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
বিভাগীয় চেয়ারম্যান তাদের জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থীর ক্লাসে উপস্থিতি ৫০ শতাংশ না হলে কেউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। এ প্রেক্ষিতে অন্তর দে শুভসহ মোট তিনজন পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। তখন অন্তর দে শুভ ‘আমাকে যদি পরীক্ষা দিতে না দেওয়া হয়, তবে কেউ পরীক্ষা দেবে না’ বলে হুমকি দেন। পরে অন্তর দে শুভ, ইসমে আজম শুভ, গোলাম রব্বানী ও আসিফ আল মাহমুদ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাস্তায় অবস্থান নেয়। ওই সময় সহকারী প্রক্টর ড. মো. আমজাদ হোসেন সেখানে গেলে তার সঙ্গে রাস্তায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা অশোভন আচরণ করা হয়।
পরে ২৩ অক্টোবর প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে খবর পাওয়া যায় যে, অন্তর দে শুভ ও ইসমে আজম শুভর নেতৃত্বে পরীক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ আম-বটতলা বাজারে আটকে রাখা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ওই দু’জন প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষার্থীদের যশোর শহরস্থ হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনালে নিয়ে আটকে রাখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এ ঘটনার সত্যতা পায়। এর আগে গত ১৮ জুলাই উক্ত শিক্ষার্থীরা চাঁদা দাবি করে ‘বিডিরেন’র কিছু মালামাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেয়। ওই সময় তাদের চূড়ান্ত সতর্কীকরণের নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও তারা সংশোধিত হয়নি।