যশোর পলিটেকনিকে শিক্ষকদের আন্দোলনে চারদিন ধরে অচলাবস্থা

যশোর প্রতিনিধি |

দ্বিতীয় শিফটের ভাতা নিয়ে চারদিন ধরে আন্দোলন করছেন যশোর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এতে পাঠদান ও কার্যক্রম বন্ধ হয়ে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আন্দোলনের কারণে শ্রেণিকক্ষে এসেও ফেরত যেতে হচ্ছে দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষার্থীদের।

জানা গেছে, চার বছর ধরে সরকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় শিফটের জন্য শিক্ষক ও কর্মচারীদের ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের পে-স্কেল অনুযায়ী মূল বেতনের ৫০ শতাংশ ভাতা দিয়ে আসছিল। তবে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাইয়ে পে-স্কেলের বদলে প্রত্যেকের জন্য একটি নির্দিষ্ট অংকের ভাতা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এতে অতিরিক্ত হিসেবে পাওয়া বেতন-ভাতা অর্ধেকে নেমে আসে। এ কারণে শিক্ষক ও কর্মচারীরা দ্বিতীয় শিফটের জন্য ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের পে-স্কেল অনুযায়ী মূল বেতনের ৫০ শতাংশ ভাতা বহাল রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে এ দাবি না মানায় তারা গত বৃহস্পতিবার থেকে দ্বিতীয় শিফটে পাঠদানসহ সব ধরনের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারকে আমরা দুটি অপশন (বিকল্প) দিয়েছি। এক. পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় শিফট পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করা হোক এবং দুই. আমাদের দিয়ে এ শিফট চালাতে হলে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের পে-স্কেল অনুযায়ী মূল বেতনের ৫০ শতাংশ ভাতা প্রদান বহাল রাখতে হবে। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা দ্বিতীয় শিফটের পাঠদান-পরীক্ষাসহ কোনো ধরনের কার্যক্রমে অংশ নেব না। এটা আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত।

যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, এ প্রতিষ্ঠানে সাতটি বিভাগে ৩ হাজার ৬০৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৪৭ জন প্রথম শিফট ও ১ হাজার ৭৫৬ জন দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় শিফটের জন্যে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে নতুন করে ৫৯৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর ওরিয়েন্টেশন ক্লাস হওয়ার নির্ধারিত দিন ছিল ১ আগস্ট।  তবে শিক্ষক না আসায় নতুন শিক্ষার্থীরা এদিন শ্রেণিকক্ষে বসে থেকে পরে বাড়িতে ফিরে গেছে। চারদিন ধরে তারা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে ও আসছে। কিন্তু কোনো পাঠদান হচ্ছে না।

নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী শার্শা উপজেলার নাইমুল হাসান বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে কম্পিউটার বিভাগে নতুন ভর্তি হয়েছি। ১ আগস্ট ওরিয়েন্টেশন ক্লাস হওয়ার কথা ছিল। আমরা গিয়ে কোনো শিক্ষককে পাইনি। শুনেছি, শিক্ষকেরা আন্দোলন করছেন। কবে থেকে পাঠদান শুরু হবে, তাও কেউ বলতে পারছে না।

মো. মাসুম বিল্লাহ নামে এক অভিভাবক বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমার ভাগ্নেকে সরকারি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে পাঠদান হচ্ছে না। দ্রুত সমস্যার সমাধান করে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান তিনি।

এ ব্যাপারে যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ জিএম আজিজুর রহমান বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীরা দ্বিতীয় শিফটের পাঠদানসহ সব ধরনের কার্যক্রম চারদিন ধরে বন্ধ করে দিয়েছেন। সরকার তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। তবে আশা করছি, শিগগিরই এ অচলাবস্থার নিরসন হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার - dainik shiksha ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার - dainik shiksha ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার অবন্তিকার আত্মহত্যা: সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস জবি উপাচার্যের - dainik shiksha অবন্তিকার আত্মহত্যা: সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস জবি উপাচার্যের হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের - dainik shiksha হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মিলছে না মূল্যায়ন - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মিলছে না মূল্যায়ন মূল্যায়ন বুঝলেও নৈপুণ্য অ্যাপে চ্যালেঞ্জের মুখে শিক্ষকরা - dainik shiksha মূল্যায়ন বুঝলেও নৈপুণ্য অ্যাপে চ্যালেঞ্জের মুখে শিক্ষকরা ‘পড়তে ও লিখতে’ শেখা প্রকল্প কেনো - dainik shiksha ‘পড়তে ও লিখতে’ শেখা প্রকল্প কেনো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057249069213867