কাজের বিনিময়ে অর্থ দেয়ার প্রচলনই পৃথিবীর সব দেশে। হোক সেটা শিক্ষকতা বা অন্য কোনো পেশায়। সরকারি কোষাগার থেকে কিংবা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকেই দেয়া হয়। কিন্তু যদি স্কুলে নগদ অর্থের পরিবর্তে গরু-ছাগল বেতন হিসেবে দেয়া হয় সেটি আসলেই অবাক হওয়ার মতো। এমনটাই চালু হয়েছে জিম্বাবুয়েতে। দেশটির সরকারি বেতনভুক্ত যে কোনো পেশার মধ্যে সবচাইতে কম বেতন পান শিক্ষকরা। শতভাগ বেতন বৃদ্ধি ও অন্যান্য সুবিধা আদায়ের জন্য দীর্ঘদিন যাবত আন্দোলন করে আসছেন দেশটির শিক্ষকরা।
জিম্বাবুয়ের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষামন্ত্রী পল মাভিমা বলেছেন, অভিভাবকদের কাছ থেকে স্কুলের বেতন আদায়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো নমনীয় হতে হবে। শুধু গবাদিপশুই নয়, নানা ধরনের সেবাও বেতনের বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। কেউ যদি রাজমিস্ত্রির কাজ করে, তাহলে তাকে দিয়ে স্কুলে রাজমিস্ত্রির কাজ করানো যেতে পারে।
কোনো কোনো স্কুলে ইতোমধ্যেই নগদ অর্থের বদলে গবাদিপশু গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই পদক্ষেপ এমন এক সময় নেয়া হয় যখন জিম্বাবুয়ের ব্যাংকগুলো গবাদিপশু অর্থাৎ গরু, ছাগল, ভেড়াকে জামানত হিসেবে গ্রহণ করতে শুরু করে।
তবে, গত সপ্তাহে দেশটির সরকার শিক্ষকদের বেতন ১০ শতাংশ বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী পল মাভিমা স্থানীয় একটি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘শিক্ষকরা শতভাগ বেতন বৃদ্ধি চেয়েছিলেন। তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন। আপাতত: ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখা গেছে।”
সম্প্রতি, জিম্বাবুয়ের পার্লামেন্টে পাস হওয়া এক আইনে বলা হয়েছে, মোটরগাড়ি বা যন্ত্রপাতির মতো অস্থাবর সম্পত্তিকে ব্যাংকে জামানত হিসেবে রাখা যাবে।জিম্বাবুয়েতে নগদ অর্থের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ব্যাংক থেকে অর্থ তুলতে মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
সরকার অভিযোগ করছে, এক শ্রেণির মানুষ দেশ থেকে অর্থ পাচার করছে বলেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, বিনিয়োগ সঙ্কট এবং বেকারত্বই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। শিক্ষাব্যস্থায় নিম্নমূখী যাত্রা, সোসাল মিডিয়ার তীব্র সমালোচনা ও শিক্ষকদের দাবীর মুখে গত বছর ডিসেম্বরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষামন্ত্রী লাজারুস ডোকোরাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। প্রতিমন্ত্রী পল মাভিমাকে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়।