একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার উমেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবুল বাসার ঘটনাটি তদন্তে বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
এর আগে শনিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয় ঘেরাও করে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেন। এতে প্রধান শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের মৌখিক নির্দেশ প্রদান করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবুল বাসার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, একজন অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীসহ ১৯ জন অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ তদন্ত প্রতিবেদন আগামীকাল (সোমবার) পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশ মোতাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: যৌন হয়রানির অভিযোগ শুনে অজ্ঞান প্রধান শিক্ষক
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে উমেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিচার চেয়ে প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিমের শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় ঘেরাও করে অভিভাবক ও এলাকাবাসী। গত প্রায় তিন বছর ধরে ছাত্রীদের লাইব্রেরিতে আটকে ও স্কুল ছুটির পর শ্রেণিকক্ষে একা ডেকে যৌন হয়রানি করে আসছেন। সর্বশেষ ঈদুল আযহার আগে চতুর্থ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করেন প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনা এলাকায় ফাঁস হয়ে গেলে ক্ষুদ্ধ অভিভাবকরা বিদ্যালয় ঘেরাও করে। এ সময় অভিভাবকরা যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীদের নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে এ ঘটনার প্রতিবাদ করে বিচার দাবি করেন। এর কিছুক্ষণ পরই প্রধান শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় থানায় এখনো কেউ অভিযোগ দাখিল করেনি বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আসাদুর রহমান।