ঝালকাঠির রাজাপুরে “বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা” শব্দের বিকৃতিসহ বেশ কয়েকটি ভুল বানান সম্বলিত প্রশ্নপত্রে তৃতীয় শ্রেণির “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া অসামাঞ্জস্য ও বৈষম্যমূলক মানবন্টনে দ্বিতীয় শ্রেণির “ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা” এবং “হিন্দু ও নৈতিক শিক্ষা” বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে।
সোমবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজাপুর উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। রাজাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক প্রণীত বার্ষিক পরীক্ষার এ প্রশ্নপত্র পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের সরবারহ করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির প্রশ্নপত্রে ভুলগুলো হল “যানাহন, বঙ্ঘবন্ধুর, মহসাগর, স্বীধীনতার ও ১৬ই ডসেম্বর” ।
জানাগেছে, রাজাপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং সাংগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রি দেবনাথ। তারা দু’জনে প্রশ্নের প্রুফ দেখে সম্মানী বাবদ ২ হাজার টাকার ভাউচার তৈরি করেছেন। যদিও এখন দুজনেই প্রশ্নের প্রুফ দেখার বিষয়টি অস্বীকার করছেন।
রাজাপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার কোডিং কাটিংয়ের কাজ করছি। আমি কোন প্রশ্নের প্রুফ দেখিনি। এজন্য নির্দিষ্ট কমিটি আছে। প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রি দেবনাথের সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।
প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রি দেবনাথ বলেন, পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সভাপতি করে কমিটি করা আছে। আমি প্রশ্নের বিষয়ে কিছু জানি না। উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে একত্রে কাজ করার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, প্রধান শিক্ষকদের প্রশ্ন করা প্রুফ দেখার দায়িত্ব ছিলো। সেখানে প্রশ্ন ঠিকভাবেই হয়েছে , প্রশ্নের প্রুফও ঠিক ছিলো। প্রেসে ছাপানোর সময় ভুল করেছে।
রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আলমগীর দৈনিক শিক্ষাকে জানান, বানান ভুল সম্বলিত প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি আমরাও জেনেছি। ডিপিও (জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার)এর নির্দেশক্রমে আলোচনা সাপেক্ষে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইয়াদুজ্জামান বলেন, রাজাপুর উপজেলা পরীক্ষা কমিটিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ২ জন শিক্ষক (হিমাদ্রি দেবনাথ এবং মাহমুদা বেগম)কে সদস্য করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রে ভুল বা অসংঙ্গতি হলে এর দায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিকে বহন করতে হবে। এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।