রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চেয়েছেন মামলার চার আসামি।
তারা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের মালিক জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের সহকারী এনায়েত হোসেন।
সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
আদালত রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ৪ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ৪১ সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জন সাক্ষ্য দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে বাসচাপায় নিহত হন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)।
আহত হন আরও ১০-১৫ শিক্ষার্থী। ঘটনার দিনই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। ২৫ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস আসামিদের অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার দিন দুপুরে চালক ও তাদের সহকারীরা বেশি লোক ওঠানোর লোভে যাত্রীদের কথা না শুনে এবং তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে জিল্লুর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়ান। এ সময় আরেকটি বাসের চালক মাসুম বিল্লাহ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ শিক্ষার্থীর ওপর গাড়িয়ে উঠিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং নয়জন আহত হন।
জাবালে নূরের যে তিন বাসের রেষারেষিতে ওই দুর্ঘটনা ঘটে, সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো- ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭, ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় নিহত হন দুই শিক্ষার্থী। বাসটি চালাচ্ছিলেন মাসুম বিল্লাহ।
ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের চালক ছিলেন জুবায়ের এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০ নম্বরধারী বাসের চালক ছিলেন সোহাগ।
এ মামলার ছয় আসামি। এদের মধ্য জাবালে নূর পরিবহনের মালিক জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের সহকারী এনায়েত হোসেন কারাগারে রয়েছেন। জাবালে নূর পরিবহনের আরেক মালিক শাহাদাত হোসেন জামিনে রয়েছেন। তার পক্ষে মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশ স্থগিত রয়েছে। চালকের সহকারী কাজী আসাদ এখনও পলাতক।